অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সাইবার ক্রাইম ও কিশোর গ্যাং বন্ধ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


ঢাকার কুর্মিটোলায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদর দপ্তরে, বাহিনীর ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩।
ঢাকার কুর্মিটোলায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদর দপ্তরে, বাহিনীর ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩।

সাইবার ক্রাইম ও কিশোর গ্যাং-এর তৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (১৯ মার্চ) রাজধানী ঢাকার কুর্মিটোলায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদর দপ্তরে, বাহিনীর ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ আহবান জানান।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সাইবার ক্রাইম মনিটর করতে হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো-কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।” সরকার দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, “ডিজিটালাইজেশনের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাইবার ক্রাইম-ও বেড়েছে।” তিনি বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা, দুর্দশা সৃষ্টি করা নয়।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “কিছু রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি রয়েছে। বাংলাদেশ যত অগ্রগতিই অর্জন করুক না কেন, তারা কিছুই দেখতে পায় না। আর একটি অংশ আছে যারা বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের বদনাম করে এবং এর মাধ্যমে আর্থিক বা অন্যান্য সুবিধা অর্জন করে।”

র‍্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর আরোপিত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এই বাহিনীর সদস্যদের তাদের সম্পর্কে অন্যরা যা বলে তাতে কান না দিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, “এটা আমাদের দেশ যা রক্তের আত্মত্যাগের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছে… আমরা জানি কে কী করে; আমরা সেই অনুযায়ী মূল্যায়ন করবো। আমাদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করতে হবে।”

“যারা অপপ্রচার চালায় ও বাংলাদেশের বদনাম করে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। কেন তারা এটা করছে এবং তাদের উদ্দেশ্য আমাদের খুঁজে বের করতে হবে;” উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশিরা বিচার করতে পারে কে ভালো বা মন্দ কাজ করেছে। কেউ যদি কোনো অপরাধ করে, তাহলে আমাদের অবশ্যই তা নিয়ে কথা বলতে হবে। কিছু মানুষ কী বলছে, তা নিয়ে মর্মাহত হবেন না। আপনাদেরকে আত্মসম্মান এবং আত্মবিশ্বাসের অনুভূতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।”

কিশোর গ্যাংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, “কিশোর গ্যাংয়ের সংস্কৃতি বন্ধ করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি অভিভাবক, শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব নিতে হবে। কিশোর গ্যাং বন্ধ করতে হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র‌্যাব

উল্লেখ্য, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‍্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র‍্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র‍্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।

XS
SM
MD
LG