ভারতীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা বলছেন যে ভারতের কিছু রাজ্যে প্রণীত বিতর্কিত ধর্মান্তর বিরোধী আইনগুলির লক্ষ্য খ্রিস্টান এবং মুসলিম সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন ও হয়রানি করা। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্র কমিশন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আইন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে৷
১৪ই মার্চের কমিশন ইস্যু আপডেট ভারতের রাজ্য-স্তরের ধর্মান্তর বিরোধী আইন শীর্ষক প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলেছে, “ভারতের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের ধর্মান্তর বিরোধী আইন ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতার অধিকারের জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুরক্ষা লঙ্ঘন করে। তারা অননুমোদিতভাবে একজন ব্যক্তির ধর্মান্তরিত করার অধিকার এবং অন্য ব্যক্তিকে স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত করার জন্য অনুপ্রাণিত বা সমর্থন করার অধিকারকে সীমিত করে এবং শাস্তি দেয়।”
কমিশন আরো বলেছে, "ধর্মান্তর বিরোধী আইনগুলি ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অবস্থাকে আরও খারাপ করে তোলে, যেমনটি ইউএসসিআরএফ রিপোর্ট করেছে যে তা ইতোমধ্যেই খারাপ অবস্থায় রয়েছে।”
হিন্দু গোষ্ঠী এবং ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির নেতারা অভিযোগ করেছেন যে খ্রিস্টান মিশনারিরা লোভ দেখিয়ে, শক্তি প্রয়োগ করে এবং প্রতারণামূলক উপায়ে ভারত জুড়ে মানুষকে ধর্মান্তরিত করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, তারা দাবি করেছে যে মুসলমানরা অন্যায় উপায়ে মানুষকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করছে।
ভারতের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে ১২টিতে রাজ্য পর্যায়ের ধর্মান্তর বিরোধী আইন প্রণীত হয়েছে। অন্য কিছু রাজ্য এই আইন প্রবর্তনের কথা ভাবছে।
যেসব রাজ্যে ধর্মান্তর বিরোধী আইন বলবৎ আছে তারা বলে যে তারা অনিচ্ছাকৃত ধর্মান্তর মোকাবেলা করার জন্য এগুলি প্রণয়ন করেছে।
ইউএসসিআইআরএফ বলেছে যে ধর্মান্তর বিরোধী আইনের বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য, যার মধ্যে ধর্মান্তর করণের উপর নিষেধাজ্ঞা, নোটিশের প্রয়োজনীয়তা এবং বোঝা-বদল করার বিধানগুলি "ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতার জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুরক্ষার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ।"
কমিশন প্রতিবেদনটি ঘোষণা করে বলেছে, "এই বৈশিষ্ট্যগুলির প্রতিটিই মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত অধিকার লঙ্ঘন করে।” ভারত ১৯৪২ সাল থেকে এই ঘোষণায় স্বাক্ষরকারী এবং ১৯৭৯ সালে চুক্তিটি অনুমোদন করেছে।