অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ক্যালিফোর্নিয়ায় তাইওয়ানের নেতার যাত্রা বিরতি, যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের দিকে সবার নজর


তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন (মধ্যে) তার বেলিজ সফরের শেষ পর্যায়ে বেলমোপানে অবস্থিত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে একজন সিনেটরের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন; ৩ এপ্রিল, ২০২৩।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন (মধ্যে) তার বেলিজ সফরের শেষ পর্যায়ে বেলমোপানে অবস্থিত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে একজন সিনেটরের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন; ৩ এপ্রিল, ২০২৩।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসছেন। সেখানে তিনি হাউজ স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি ও অন্যান্য আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন। চীন এ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে।

বুধবার সাই ক্যালিফোর্নিয়ার সিমি ভ্যালিতে অবস্থিত রোনাল্ড রিগান প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরি ও জাদুঘরে ম্যাককার্থি এবং অন্যান্য আইনপ্রণেতাদের একটি দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন। ম্যাককার্থির কার্যালয় থেকে এই বৈঠককে “দ্বিপাক্ষিক” হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র জানান, চীন দৃঢ়ভাবে এই বৈঠকের বিরোধিতা করে এবং তারা “পরিস্থিতি কীভাবে এগিয়ে যায়’ সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখবে। আর, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতাকে দৃঢ়তার সঙ্গে সুরক্ষা দেবে”।

সাই ও ম্যাককার্থি প্রকাশ্য কোনো যৌথ বক্তব্য দেবেন কী না, এ বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। কর্মকর্তারা এই বৈঠককে “একান্ত ” বলে অভিহিত করেছেন। বৈঠকের জন্য নির্ধারিত স্থানটি বিশেষভাবে অর্থবহ। কারণ, ষড়-নিশ্চয়তা (সিক্স অ্যাশুরেন্স) নামে অভিহিত যুক্তরাষ্ট্র-চীন নীতিমালা রিগান প্রশাসনের আমলে চালু করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে এটাই ওয়াশিংটনের নিজস্ব এক চীন নীতির মূল ভিত্তিতে পরিণত হয়।

এই ষড়-নিশ্চয়তার আওতায় যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করতে রাজি হয়নি। এমন কী, তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করেনি।একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা কখনো তাইওয়ানকে বেইজিংয়ের সঙ্গে দরকষাকষি করার জন্য চাপ দেবে না।

সাই’র যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রা বিরতি প্রসঙ্গে চীনকে মাত্রারিতিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো থেকে বিরত থাকার জন্য বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে সতর্ক করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। আগের উদাহরণ টেনে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, দীর্ঘ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান চীন-নীতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রক ওয়াশিংটনে জানিয়েছে, তাইওয়ান রিলেশান্স অ্যাক্ট, ষড়-নিশ্চয়তা ও তিনটি ঘোষণা; ওয়াশিংটনের এক-চীন নীতির ৩ ভিত্তি। এগুলোতে এমন কোন শব্দ-বাক্য নেই, যেখানে স্পষ্টভাবে বলা আছে, তাইওয়ানের কোনো প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রাবিরতি করতে পারবেন না।

তাইওয়ানের কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অন্য যেকোনো শহরে যাত্রা বিরতি নিতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের স্ব-আরোপিত বিধিনিষেধ ও তাইওয়ানের নীরব সমর্থন মতে, তাইওয়ানের কোনো নেতার ওয়াশিংটনে যাত্রা বিরতি নেয়ার বিষয়টি গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের দৃষ্টিতে গুরুতর উষ্কানি হিসেবে বিবেচিত হবে। যার ফলে তাইওয়ানের কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা জাতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী কখনো যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী শহরে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করতে আসেননি।

তাইওয়ান কখনো চীনের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে না থাকা সত্ত্বেও চীন স্বশাসিত ও গণতান্ত্রিক দ্বীপ রাষ্ট্রটিকে তাদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে। যুক্তরাষ্ট্র চীনের তাইওয়ানের ওপর সার্বভৌমত্বের দাবি “স্বীকার” করলেও এতে সমর্থন জানায়নি। যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি নিয়ে সচেতন, তবে কখনো তাইওয়ানের সার্বভৌমত্বের ওপর চীনের দাবিকে সমর্থন করেনি। আর, তাইওয়ানের স্বাধীনতার প্রতিও সমর্থন জানায়নি।

XS
SM
MD
LG