বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থেকে, বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)-এর সদস্যদের অস্ত্র সরবরাহকারী সন্দেহে তিন জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আটক ব্যক্তিরা হলেন; মোক্তার আহমদ (৫২), আব্দুর রহিম (৪০) ও মো. এনামুল হক (৩৮)। তারা মহেশখালী ও চকরিয়া উপজেলার বাসিন্দা। র্যাব-১৫ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল বৃহস্পতিবার সকালে বড় ভেউলা লাল ব্রিজ এলাকা থেকে তাদের আটক করে।”এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি এক নলা ও একটি দোনলা বন্দুক এবং অস্ত্র বিক্রির নগদ এক লাখ পাঁচ হাজার ৭০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে বালে জানান তিনি
এদের মধ্যে মোক্তার আরসার প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা সাইফুল। তিনি বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা স্বীকার করেছে যে তারা দীর্ঘদিন ধরে মহেশখালী ও চকরিয়া উপজেলা এলাকায় অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা পরিচালনা করছে এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসা সদস্যসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে তারা।”
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র্যাব
উল্লেখ্য, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।