ভারত জুড়ে তাপমাত্রার পারদ চড়ছে। সারা দেশে তাপপ্রবাহ চলছে। মহারাষ্ট্র রাজ্যের নভি মুম্বইয়ে সানস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। অসুস্থ অনেকে। রবিবার ১৬ এপ্রিল ওই এলাকায় ‘মহারাষ্ট্র ভূষণ পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বহু মানুষ। অনুষ্ঠানে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। চাঁদিফাটা রোদে খোলা আকাশের নীচে বসেছিলেন দর্শকরা। তার জেরে সানস্ট্রোকে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে। আরও ২৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অনেকেই এমন আছেন, যাঁরা হিট স্ট্রোকের (Heat Stroke) সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন না। হিট স্ট্রোক বা সানস্ট্রোক হল একটি গরমজনিত সমস্যা। অনেকক্ষণ কড়া রোদের মধ্যে থাকলে অথবা খুব গরমের মধ্যে থাকলে হতে পারে হিট স্ট্রোক। মানুষের শরীর সাধারণত নিজে থেকেই ঘাম ও অন্যান্য পদ্ধতির মাধ্যমে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু যখন শরীর নিজে থেকে এই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে অপারগ হয়, তখনই হিট স্ট্রোকের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
হিট স্ট্রোক বা সানস্ট্রোক আসলে কীঃ
প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলে। উষ্ণ আবহাওয়ায় শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে ত্বকের রক্তনালি প্রসারিত হয়ে অতিরিক্ত তাপ পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়। ঘাম নিঃসৃত হয়েও শরীরের অভ্যন্তরীণ উষ্ণতা কমায়। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে দীর্ঘক্ষণ থাকলে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বিপদসীমা ছাড়িয়ে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
কী কী উপসর্গ দেখা দেয়ঃ
সবক্ষেত্রে একই উপসর্গ দেখা না দিলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যা দেখা যায়ঃ-
১) শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া
২) মাথা ঝিমঝিম করা
৩) কোনও কোনও ক্ষেত্রে কিছু বুঝে উঠতে না পারা
৪) মাথা ঘোরা
৫) বমি বমি ভাব
৬) মাসল ক্র্যাম্প বা খিঁচুনি
৭) প্রচণ্ড কাঁপুনি
৮) হ্যালুসিনেশন
৯) প্রচণ্ড তেষ্টা
অনেক সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তি কোমায় পর্যন্ত চলে যেতে পারেন। এমনকী খুব দ্রুত মৃত্যুও হতে পারে।
হিট স্ট্রোক হলে কী করবেনঃ-
বিশেষজ্ঞদের মতে,
১) যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে
২) চোখে, মুখে, ঘাড়ে জল দিতে হবে, স্নান করানো গেলে সবচেয়ে ভালো
৩) প্রচুর পরিমাণে জল পান করাতে হবে
এত সব করেও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির যদি অবস্থার উন্নতি না হয়, তাহলে সময় নষ্ট না করে দ্রুত নিকটতম স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হবে। চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হলে কিন্তু অঙ্গহানি থেকে প্রাণহানির পর্যন্ত সম্ভাবনা থাকে। তাই একটুও সময় নষ্ট করা উচিত নয়।