"দিনে ১০০ টাকা হয়। ৫০ টাকা খাই, ৫০ টাকা পাঠাই," এই রোজগারটুকুর কথা যখন বলছেন কলকাতার প্রায় অবলুপ্ত পেশা ভিস্তির রেজাউল ভিস্তিওয়ালা তখনও তার মুখে লেগে ছিল ম্লান হাসি। তার নিজের কথাতেই, "আমি বাড়ি থেকে ভেগে এসেছিলাম খাবার জন্য। কোনও কাজ ছিল না গ্রামে। চাচা বলল এই ভিস্তির কাজ কর...তো শুরু হয়ে গেল। ব্যস তিরিশটা বছর কেটে গেল।"
রেজাউল ভিস্তিওয়ালার পেশাগত জীবন ত্রিশ বছরের হলেও কলকাতা শহরের ইতিহাসের মতোই তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ভিস্তির গল্পও কয়েক শতাব্দী প্রাচীন। সেসব অবশ্য জানেন না পাশের রাজ্য বিহার থেকে খাবারের সন্ধানে কলকাতায় এসে ভিস্তি হয়ে ওঠা রেজাউল।
মশক কাঁধে শহরের গলি-ঘুঁজি ঘুরে গুটিকয় দোকানে জল দিতে দিতে তিনি জানতেও পারেন না আধুনিক নগর জীবনে একদিন হয়তো আচমকা হারিয়ে যাবে এই পেশা। তবু আজও প্রতিদিন মশকে জল ভরে বেরিয়ে পড়েন রেজাউল। ভিস্তিওয়ালার সামান্য রোজগারেই গ্রামে তার স্ত্রী-সন্তানকে, পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখেন যত্নে। জলের নাম যে জীবন, তা হয়তো এভাবেই সত্যি হয়ে ওঠে।
ভয়েস অফ আমেরিকা-র জন্য প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন কুনাল চৌধুরী।