অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের কর্নাটকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, এনআরসির কথা বিজেপির


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

ভারতের উত্তরপ্রদেশ, গোয়া, গুজরাত, অসম, মণিপুর, ত্রিপুরা, উত্তরাখণ্ড— বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির অন্যতঅম। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পরীক্ষা কর্নাটকে। প্রাক নির্বাচনী বেশিরভাগ সমীক্ষা রিপোর্টই গেরুয়া শিবিরকে হতাশ করছে ভারতের দক্ষিণের রাজ্যটিতে।

গোটা দাক্ষিণাত্যে একমাত্র সেখানেই ক্ষমতায় আছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে চেনা পথেই হাঁটল গেরুয়া শিবির। সোমবার ১লা মে কর্নাটক বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করে দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা ঘোষণা করেন, দল ক্ষমতায় টিকে গেলে কর্নাটকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করবে। চালু করা হবে এনআরসি অর্থাৎ ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস।

ক্ষমতাসীন দল হিসাবে কর্নাটকের ইস্তাহারে বিজেপি উন্নয়ন এবং পরিষেবাকে দলীয় ঘোষণায় সামনের সারিতে রাখবে বলেই মনে করা হয়েছিল। দেখা গেল ইস্তাহারে কর্মসংস্থান তৈরি এবং পরিষেবার উন্নতি নিয়ে প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা নতুন কিছু নয়। বাড়তি সুবিধা হিসাবে গরিব পরিবারগুলিকে বছরে তিনটি করে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার বিনা পয়সায় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

তবে সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অপশাসনের অভিযোগ এবং প্রার্থী বাছাই নিয়ে কোন্দলের জের এবং কংগ্রেসের কোমর বেঁধে লড়াইয়ের মোকাবিলায় কর্নাটকে বিজেপি

হিন্দুত্বের চেনা পথেই হাঁটবে বলেই মনে করছিল রাজনৈতিক মহল। হালে নাগরিকত্ব আইনের পাশাপাশি এনআরসি নিয়ে হইচই হলেও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউনিফর্ম সিভিল কোডের বিষয়টি অনেকের কাছেই বোধগম্য হয় না। যদিও অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু চালু করাই ছিল বিজেপির প্রাথমিক ঘোষণা।

অভিন্ন বিধি গোটা দেশে চালু করার আগে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে তা আগে প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্ম শিবির, যা বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের অন্যতম অস্ত্র। গোয়া, উত্তরাখণ্ড, গুজরাতের পর কর্নাটকেও এবার তা চালু করার কথা জানাল দল।

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এককথায় বলতে গেলে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে গোটা দেশে এক আইন বলবৎ করা, যা নিয়ে মুসলিম, খ্রিস্টান-সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা উদ্বিগ্ন। কারণ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে বিয়ে, বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার, দত্তক ইত্যাদি বেশ কিছু ক্ষেত্রে পৃথক ব্যক্তিগত আইন আর চালু থাকবে না। যেগুলির সঙ্গে ধর্মীয় বিধানও যুক্ত। সংখ্যালঘুদের অভিযোগ, বিজেপি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার নামে হিন্দু শাসন বিধি প্রণয়ন করতে চায়।

কর্নাটকে মেরুকরণ ও কট্টর হিন্দুত্ব বিজেপির কাছে কতটা ‘জীবনদায়ী’ হয়ে উঠেছে তা বোঝা যায় এনআরসি চালুর ঘোষণাতেও। বাংলাদেশি মুসলিমদের চিহ্নিত করতে এনআরসি চালু হয়েছে অসমে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছিলেন, গোটা দেশেই ক্রমান্বয়ে এনআরসি চালু করা হবে। যদিও পরে সরকার ও বিজেপির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় এনআরসি শুধু অসমেই হবে।

XS
SM
MD
LG