অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

স্বাগতিক দেশকে অবশ্যই ভিয়েনা কনভেশন অনুযায়ী কূটনৈতিক কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে: স্টেট ডিপার্টমেন্ট


যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী সকল কূটনৈতিক কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল ১৫ মে (যুক্তরাষ্ট্র সময়) স্টেট ডিপার্টমেন্টে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে, এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমি যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বা এর কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশদ বিবরণে প্রবেশ করতে যাচ্ছি না।”

তিনি উল্লেখ করেছেন, “কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, যে কোনো স্বাগতিক দেশে-কে, অবশ্যই সকল কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণ এবং কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে হবে এবং কর্মীদের ওপর যে কোনো আক্রমণ প্রতিরোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।”

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দূতসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে অতিরিক্ত নিরাপত্তা এসকর্ট না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর প্যাটেল এ মন্তব্য করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার (১৫ মে) বলেন, পাঁচ থেকে ছয়জন কূটনীতিক এ ধরনের সেবা পেয়ে থাকেন এবং এখন অন্যান্য কূটনীতিকরাও এই সুবিধা চান। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, “তারা চাইলে অর্থের বিনিময়ে পেতে পারে। আমরা করদাতাদের অর্থ দিয়ে এই অতিরিক্ত (নিরাপত্তা) এসকর্ট পরিষেবা প্রদান করবো না।”

ড. মোমেন বলেন, “উন্নত দেশগুলোতে কোনো সরকারই এ ধরনের বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেয় না।” তিনি আরো বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি হয়নি যে এ ধরনের সেবা প্রয়োজন।”

এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কিছু কিছু গণমাধ্যমে ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বা বাংলাদেশস্থ বিদেশি কুটনীতিকদের নিরাপত্তা দেয়া নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য আমাদের নজরে এসেছে।

উল্লেখ্য যে প্রতিটি দূতাবাসে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা বিধান অব্যাহত রেখেছেন এবং রাষ্ট্রদূতদের পুলিশ প্রদত্ত গানম্যান নিয়োজিত আছেন। এই কারণে নিরাপত্তা প্রত্যাহার সম্পর্কিত এই বিভ্রান্তকর খবরটি সঠিক নয়।

বাংলাদেশ বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য আন্তর্জাতিক আইন এবং প্রচলিত রীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সাধারণত বাংলাদেশ পুলিশ বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তার গুরু দায়িত্বটি সবসময় পালন করে থাকে।

কিন্তু বাংলাদেশের কয়েক বছর আগের একটি ঘটনা পরবর্তী সময় থেকে কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে অলিখিতভাবে গাড়িসহ মূলত নিয়মিত ট্রাফিক মুভমেন্টের সহায়তার জন্য বাড়তি কিছু লোকবল দেয়া হয়েছিলো।

বর্তমানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে আছে। তাই তাদেরকে বাড়তি নিরাপত্তা প্রদানের কোনো আবশ্যকতা নাই।

পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর কাজের পরিধি বৃদ্ধির জন্য এই বাড়তি সুবিধাটি এখন অব্যাহত রাখা যাচ্ছে না।

এখানে স্মরণ করা যেতে পারে যে পৃথিবীর কোনো দেশেই বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্রদূতকে বাড়তি নিরাপত্তা ও চলাচলের ক্ষেত্রে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো সুবিধা দেয়া হয় না।

আরো উল্লেখ করা যায় যে সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু দূতাবাস থেকে একই ধরনের সুবিধার জন্য অনুরোধ করার একটি প্রবণতা আমরা লক্ষ্য করছি। এ লক্ষ্যে, তাদের সকলের সুবিধার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ আনসার বাহিনীতে একটি চৌকস দল তৈরি করেছে।

বিদেশি কূটনীতিকরা তাদের খরচে এ সুবিধাটি গ্রহণ করতে পারবেন। কোনো দূতাবাস আনসার সদস্যদের এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে চাইলে বা বাড়তি সুবিধা নিতে চাইলে আমাদেরকে লিখিতভাবে জানালে আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

খুব শিগগিরই সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সকল বিদেশি দূতাবাসকে জানিয়ে দেয়া হবে।

XS
SM
MD
LG