ভারতের সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ব্যুরো অর্থাৎ সেবি দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, তারা আদৌ আদানি গ্রুপ অফ কোম্পানিজের বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত চালাচ্ছে না । ২০১৬ সাল থেকে তারা তদন্ত চালাচ্ছে বলে কেন্দ্রের বিভিন্ন মহল থেকে যা দাবি করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন তথ্য।
সুপ্রিম কোর্টে সোমবার পেশ করা হলফনামায় সেবির তরফে যে ‘বিভিন্ন মহল’- এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার একটি মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রক।
তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর প্রশ্নের জবাবে গত বছর ১৯ জুলাই কেন্দ্রের অর্থ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত চৌধুরী লোকসভায় বলেছিলেন, ‘"ইয়েস ম্যাডাম, সেবি আদানিদের বিভিন্ন কোম্পানির বিরুদ্ধে বেআইনি অর্থ লগ্নি, বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে আইন বহির্ভূত ব্যবসায়িক সম্পর্কের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।" কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স এবং আয়কর দফতরও ওই সংস্থার নানা বিষয় নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে বলে জানান কেন্দ্রের অর্থ প্রতিমন্ত্রী।
মহুয়া প্রশ্নটি করেছিলেন, আদানি বিতর্কে দেশ যখন উত্তাল। এরপর সুপ্রিম কোর্ট জনস্বার্থের মামলায় আদনিদের বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে উল্লেখিত অভিযোগগুলি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্ত কমিটি গড়ে দেয় আদালত। তাতে একজন মামলাকারি দাবি করেন, সেবি ২০১৬ সাল থেকে আদানিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য চলতি বিতর্কে উত্থাপিত বিষয়ে সেবিকেও তদন্ত করে ছয় মসের মধ্যে রিপোর্ট জমা করতে বলেছিল।
গত মাসে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি সর্বোচ্চ আদালতে জানায়, তাদের আরও ছয় মাস সময় লাগবে। সোমবার ১৫ মে সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ প্রশ্ন তোলেন, "সেবি ২০১৬ সাল থেকে আদানি কোম্পানি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। তাদের বাড়তি সময় লাগবে কেন?"
সাংবাদিক বৈঠকে একই প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তাঁরা হাতিয়ার করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত চৌধুরীর সংসদে বলা বয়ান। কিন্তু সেবি আদালতে জানায়, তারা আদৌ আদানিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছিল না। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করেছে। এই তদন্ত শেষ করতে আরও অন্তত ছ’মাস সময় লাগবে।
সেবির ঘোষণায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সংসদকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগের পাশাপাশি বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, চাপের মুখে সেবি কআগের তদন্ত চেপে যাচ্ছে কি না সে বিষয়েও।