২০০৮-এর ২৬ নভেম্বর মুম্বই হামলায় অন্যতম অভিযুক্ত তহওয়ুর রানাকে ভারতের হাতে তুলে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে সে দেশের একটি আদালত। পাকিস্তান বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের এই নাগরিক লস্কর-ই-তৈবার সক্রিয় সদস্য এবং মুম্বই হামলার ষডযন্ত্রে সরাসরি যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ। ভারত সরকারের অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালত এই অভিযুক্তকে নয়া দিল্লির হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনও জানিয়েছে, তারা আদালতের নির্দেশ কার্যকর করবে।
জঙ্গি দমনে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুই দেশ গোটা পৃথিবীকে মৌলবাদ ও জঙ্গি নাশকতামুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের রায় ও প্রশাসনের নির্দেশকে সেই সংকল্পের পথে একটি পদক্ষেপ বলেই দেখছে দুই দেশ। অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞদের মতে এই ঘোষণ পাকিস্তানের জন্য বড় ধাক্কা।
ভারতের জন্য এই খবর আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন যুক্তরাষ্ট্রের সফরের কারণে। প্রধানমন্ত্রী ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন। তার আগে রানাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত খুবই আশাব্যাঞ্জক নয়াদিল্লির কর্তাদের কাছে।
মুম্বই হামলায় লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল ডেভিড কোলেম্যান হেডলি। ষড়যন্ত্র চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রের এই নাগরিকের সঙ্গে দুবাইয়ে বসে রানা ই-মেলে যোগাযোগ রাখছিল। ভারতের কাছ থেকে সূত্র পেয়ে পরে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ গ্রেফতার করে। ভারতীয় ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে আসে, রানার পিছনে হাত ছিল পাক সেনার। সে দেশের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের হয়ে ভারতে জঙ্গি নাশকতার একাধিক ছক কষেছিল সে। সেই চেষ্টা সফল হয় মুম্বইয়ে।
মুম্বই হামলায় ১৬৬জন নাগরিকের মৃত্যু হয়। তাঁদের সাতজন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, যাঁরা হামলার রাতে মুম্বইয়ের তাজ হোটেলে উঠেছিলেন।