অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে অবিজেপি বিরোধী জোটের সম্মেলন অচিরেই


সোমবার ২৩ মে দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে ও প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে অবিজেপি সব দলগুলিকে এক মঞ্চে আনতে অচিরেই সম্মেলন ডাকা হবে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল সোমবার রাতে জানিয়েছেন, দু-একদিনের মধ্যেই সম্মেলনের দিন ও জায়গা জানিয়ে দেওয়া হবে।

বৈঠক কোন দল ডাকবে তা সোমবার স্পষ্ট করেননি বেণুগোপাল। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাব মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করে রেখেছেন তিনি বিরোধী দলগুলিকে বৈঠকে ডাকতে চান। তবে সেই বৈঠক পাটনায় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সকলের সুবিধার কথা ভেবে তা দিল্লিতেও হতে পারে। যদিও আঞ্চলিক দলের হাতে রাশ রাখার বার্তা জোরদার করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাটনায় সম্মেলন ডাকার প্রস্তাব দেন নীতীশকে। সোমবার বৈঠকের পর খাড়্গে টুইটে বলেছেন, বিরোধীদের জোটবদ্ধ হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। দ্রুত বিরোধী দলগুলি কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছে।

বৈঠকের এজেন্ডা কী তাও সোমবার স্পষ্ট করেনি কোনও পক্ষই। মনে করা হচ্ছে, নিছক আসন ভাগাভাগি নয়, বিরোধী দলগুলির সম্মেলনে অন্যতম আলোচ্য হতে পারে অভিন্ন কর্মসূচি, যা বিরোধীরা সরকার গড়ার সুযোগ পেলে কার্যকর করা হবে।

একমাস আগেই খাড়্গের দিল্লির বাসভবনে নীতীশ বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকে রাহুল গান্ধীও ছিলেন। তারপর কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচন পর্ব শেষে সোমবার ফের তাঁদের বৈঠক হয়। নীতীশের সঙ্গে জনতা দল ইউনাইটেডের নেতা লল্লন সিং উপস্থিত ছিলেন। সেখানে নীতীশ বিভিন্ন দলের সঙ্গে তাঁর আলোচনার নির্যাস তুলে ধরেন। তার ভিত্তিতেই সম্মেলন ডাকার সিদ্ধান্ত হয়।

দিল্লিতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে উপরাজ্যপালের ক্ষমতার লড়াই নয়া মাত্রা পেয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তে। সুপ্রিম কোর্ট উপ রাজ্যপালের ক্ষমতা ছাঁটলেও অর্ডিন্যান্স জারি করে তা খারিজ করে দিয়েছে মোদী সরকার।

শনিবার কর্নাটকে কংগ্রেস তাদের নতুন মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে অধিকাংশ বিরোধী নেতাকে ডাকলেও ডাক পাননি কেজরিওয়াল। তবে রবিবার দিল্লিতে কেজরিওয়ালের সঙ্গে নীতীশের বৈঠক হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে লড়াইয়ে কেজরিওয়ালের পাশে থাকার আশ্বাস দেন নীতীশ।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে আজ খাড়্গে-নীতীশ বৈঠকের পর প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা জানান, দিল্লি সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে কেন্দ্র যে অর্ডিন্যান্স জারি করেছে সেটিকে আইনে রূপ দিতে সংসদে বিল এলে কংগ্রেস বিরোধিতা করবে।

গত মাসে খাড়্গে-রাহুলের সঙ্গে বৈঠকের পর নীতীশ ও বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব একাধিক বিরোধী নেতা-নেত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি অথবা ফোনে কথা বলেছেন। দু’জনেই কলকাতা ও লখনউ গিয়ে কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অখিলেশ যাদবের সঙ্গে। মুম্বইয়ে শরদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরেদের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা।

নীতীশ ভুবনেশ্বর ও দিল্লি গিয়ে বৈঠক করেন দুই মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গেও।

সূত্রের খবর, বিরোধী জোট গড়া নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ফরমুলাতেই সায় দিয়েছেন বেশিরভাগ নেতা। ব্যতিক্রম নবীন। তিনি কোনও শিবিরে নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

জেডিইউ নেতা কেসি ত্যাগি নবান্নে মমতা-নীতীশ বৈঠকের পর পরই জানিয়েছিলেন তাঁরাও মনে করেন, একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী নিশ্চিত করতে হলে যে দল বিজেপির বিরুদ্ধে যেখানে শক্তিশালী তাদের পাশে বাকিদের থাকতে হবে।

নীতীশের দল তাঁর ফরমুলার কথা প্রকাশ্যে আনার পর মমতাও প্রকাশ্যে কংগ্রেসকে এই বার্তা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, কংগ্রেস দু’শো আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করুক। সেখানে আঞ্চলিক দলগুলি কংগ্রেসের পাশে থাকবে। অন্যত্র একই ভূমিকা পালন করতে হবে কংগ্রেসকে।

XS
SM
MD
LG