ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অফিসারদের বদলি, পোস্টিংয়ের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের থেকে নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতাধীন কেন্দ্র সরকার নিজেদের হাতে নিয়েছে। এ জন্য গত শুক্রবার ১৯ মে রাতে অর্ডিন্যান্স জারি করেছে কেন্দ্র। সেই অর্ডিন্যান্স আইন হওয়ার পথে রাজ্যসভায় সেটি আটকে দিতে বিরোধী দলগুলিকে পাশে পেতে তৎপর হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
তাঁর কথায়, "লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যসভায় নরেন্দ্র মোদীকে হারিয়ে সেমি ফাইনালে জয় হাসিল করতে পারে বিরোধীরা।" সেই লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ২৫ মে ছুঁৎমার্গ ছেড়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করার ইচ্ছার কথা জানালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠকের পর কেজরিওয়াল বলেন, "দিল্লি ফিরে কাল-পরশুর মধ্যেই খাড়্গেজি এবং রাহুলজির সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাই।"
কেজরিওয়াল দু’দিন আগে পশ্চিমবঙ্গে কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন। মমতা কথা দিয়েছেন, রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদেরা দিল্লি অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করবেন।
কলকাতায় আসার আগে দিল্লিতেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের সঙ্গে বৈঠক করে আপ নেতা জনতা দল ইউনাইটেড ও আরজেডির সমর্থন আদায় করে নিয়েছেন। মুম্বই সফরে সমর্থন পেয়েছেন শিবসেনার উদ্ধব গোষ্ঠী এবং এনসিপি-র। উদ্ধব ঠাকরে এবং পাওয়ারের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন কেজরিওয়াল।
তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত তাঁর কংগ্রেস সভাপতি ও প্রাক্তন সভাপতির সঙ্গে বৈঠকের ইচ্ছাপ্রকাশ। কংগ্রেস অর্ডিন্যান্সের বিষয়ে দলগত অবস্থান না জানালেও প্রবীণ নেতা আনন্দ শর্মা জানিয়েছেন, দল সংসদে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপের বিরোধিতাই করবে। কেজরিওয়াল চাইছেন খাড়্গে, রাহুলের মুখ থেকে সমর্থনের কথা শুনতে।
কংগ্রেস ও আপের ধারাবাহিক তিক্ত সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে কেজরিওয়ালের সিদ্ধান্ত নয়া মাত্রা পেতে চলেছে। গত শনিবারই কর্নাটকে কংগ্রেস সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে কেজরিওয়ালকে আমন্ত্রণ জানায়নি কংগ্রেস শিবির। দিল্লি আপ সরকারের সঙ্গে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসেরও মতানৈক্য লেগেই আছে। এরই মধ্যে মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীর কারাবাসের সাজা এবং সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়িয়েছিল আপ। আদানি ইস্যুতেও সংসদে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ১৮ দলের বোঝাপড়ার শরিক ছিল কেজরিওয়ালের পার্টি। নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কটেও কংগ্রেসের পাশে আছে আপ। রাজনৈতিক মহলে এখন চর্চা, কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠকে রাজি হন কি না খাড়্গে, রাহুলরা।