নতুন নেভিগেশন স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ করল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো । অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে সোমবার সকাল ১০টা ৪২ মিনিট নাগাদ জিএসএলভি রকেটে চেপে পৃথিবীর মাটি ছাড়ে সেই স্যাটেলাইট। ইসরো জানিয়েছে, উপগ্রহটিকে তার নির্দিষ্ট জায়গায় বসিয়ে দিয়েছে রকেট। সেখান থেকেই যাবতীয় কাজকর্ম চালাবে সে।
স্যাটেলাইটের নাম GSLV NVS-1 নেভিক। পৃথিবীর নিম্নকক্ষে জিওসিনক্রোনাস ট্রান্সফার অরবিটে ২৫১ কিলোমিটার কক্ষপথে বসানো হয়েছে স্যাটেলাইটটিকে। মূলত নেভিগেশন ব্যবস্থার উন্নয়নেই পাঠানো হয়েছে উপগ্রহটিকে। সামরিক ব্যবস্থা ও যোগাযোগেও উন্নতি আনবে এই উপগ্রহ।
ইসরো জানিয়েছে, এই স্যাটেলাইট ২.৪ কিলোওয়াট পর্যন্ত শক্তি তৈরিতে সক্ষম। এর মধ্যে আছে একটি লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। মিশনটি ১২ বছর স্থায়ী হবে বলে আশা করেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। স্যাটেলাইটটি সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি।
আদিত্য-অভিযান থেকে একগুচ্ছ নতুন স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ—মহাকাশযাত্রায় ভারত অনন্য নজির গড়তে চলেছে বলে আগেই জানিয়েছিল ইসরো। সম্প্রতি জিস্যাট সিরিজের সবচেয়ে উন্নত কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট জিস্যাট-৩০ উৎক্ষেপণ করেছে ভারত। ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সির যৌথ উদ্যোগে এই উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছে ইসরো। ২০০৬ সালে ভারী কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট ইনস্যাট-৪সির মিশন ব্যর্থ হওয়ার পরে ইনস্যাট-৪এ উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায় ইসরো। তবে এর কার্যকারিতাও সীমিত গণ্ডির মধ্যে বাঁধা। ইসরো জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অংশের মধ্যে তো বটেই, এশিয়ার বিভিন্ন দেশ, গালফ দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখবে এই জিস্যাট-৩০।
গত বছর ডিসেম্বরে ইসরোর ‘মেঘনাদ’ রিস্যাট-২বিআর১ উপগ্রহকে মহাকাশে পৃথিবীর কক্ষে বসানো হয়েছে। ৬২৮ কিলোগ্রাম ওজনের সেই উপগ্রহকে মহাকাশে নিয়ে গেছে পিএসএলভি-সি৪৮। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের মায়া কাটিয়ে ৫৭৬ কিলোমিটার কক্ষপথে রিস্যাট-২বিআর১-কে বসিয়ে দিয়েছে ইসরোর রকেট। রিস্যাট-২বিআর১ কৃত্রিম উপগ্রহকে বলা হচ্ছে মহাকাশে ভারতের গোপন চোখ। নির্ভুল ভাবে শত্রুশিবিরের উপর নজরদারি চালাতেই পাঠানো হয়েছে এই নজরদারি উপগ্রহকে। রিস্যাট সিরিজের এই অত্যাধুনিক উপগ্রহের আগে জিস্যাট সিরিজের অনেক উপগ্রহকেই মহাকাশে পাঠিয়েছে ইসরো। এর আগে ভারতীয় নৌ বাহিনীকে সাহয্যের জন্য ২০১৩ সালে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল জিস্যাট-৭ স্যাটেলাইটটিকে। যাকে সেনা বাহিনীতে রুক্মিনী নামেও ডাকা হয়ে থাকে। ভারত মহাসাগরে কড়া নজরদারি চালায় এই উপগ্রহটি, শত্রু জাহাজের গতিবিধি টের পেলেই সেই বার্তা পাঠায় গ্রাউন্ড স্টেশনে।