অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যুক্তরাষ্ট্র সফরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বক্তব্যে এল ফোনে আড়িপাতার প্রসঙ্গ


যুক্তরাষ্ট্র সফরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বক্তব্যে এল ফোনে আড়িপাতার প্রসঙ্গ
যুক্তরাষ্ট্র সফরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বক্তব্যে এল ফোনে আড়িপাতার প্রসঙ্গ

এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন জাতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এই সফরেই ক্যালিফোর্নিয়ায় স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের মুখোমুখি হয়ে দেশের নানা প্রসঙ্গ তুলে নিজের কথা বলছিলেন রাহুল গান্ধী। সেখানেই তিনি টেনে আনেন ফোনে আড়িপাতার প্রসঙ্গ। পকেট থেকে আই ফোনটি বের করে বলেন, "আমি জানি আমার ফোন ট্যাপ করা হয়।" বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে রাহুলের এমন গুরুতর অভিযোগ ঘিরে শোরগোল শুরু হয়েছে। কারণ, সুপ্রিম কোর্ট নিয়োজিত কমিটি ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে। বরং রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কমিটি তদন্তের স্বার্থে তাঁর ফোনটি চাইলে তিনি দিতে রাজি হননি।

ভারতীয় সময় বুধবার ভোর রাতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছনোর পর রাহুল এখনও পর্যন্ত তিন জায়গায় প্রবাসী ভারতীয়দের মুখোমুখি হয়েছেন। তিন অনুষ্ঠানেই দেশের চলতি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা।

আগামী ২২ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-ও যুক্তরাষ্ট্রে

যাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁকে রাষ্ট্রীয় সফরে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেই সফরের আগে রাহুল গান্ধী তাঁর যুক্তরাষ্ট্র সফরে পদে পদে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে প্রবাসী ভারতীয় ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে প্রশ্ন উসকে দিচ্ছন বলে মত রাজনৈতিক মহলের। তিনি এর আগেও বিদেশে গিয়ে বিজেপির শাসন এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর সমালোচনায় মুখর হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে 'সবজান্তা' বলে মন্তব্য করেন। তাঁর এই মন্তব্য এখন সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিট্যাল নিউজ প্ল্যাটফর্মে ‘ট্রেন্ড’-এর তালিকায় রয়েছে। অর্থাৎ বহু মানুষ রাহুলের ওই বক্তব্য শুনছেন, পড়ছেন।

স্বভাবতই বিজেপিও পাল্টা আক্রমণে বসে নেই। বৃহস্পতিবার ১লা জুন সাত সকালেই কংগ্রেস নেতার সমালোচনা করে টুইট করেছেন সদ্য আইনমন্ত্রীর গদি হারানো বর্তমানে বিজ্ঞান বিষয়ক দফতরের মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তিনি বলেন, "এই কংগ্রেস নেতার প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করাটা স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসলে তিনি মোদীর জনপ্রিয়তাকে সহ্য করতে পারছেন না।" বুধবার কেন্দ্রের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, বিজেপির জাতীয় মুখমাত্ররা তো বটেই একাধিক রাজ্য পার্টিও তাদের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে প্রতিআক্রমণ শানায় রাহুলকে।

কংগ্রেস মহলের অবশ্য ব্যাখ্যা, রাহুল পরিকল্পনা করেই মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে তাঁকে বাড়তি আক্রমণ শানাচ্ছেন। কংগ্রেস নেতা জানেন, কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি তাঁকে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার পাশাপাশি মোদী তাঁর প্রচার আরও জোরদার করবেন। কিন্তু রাহুল-সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব কর্নাটক বিধানসভার ফলাফল থেকে আত্মবিশ্বাসী যে মোদীকে আক্রমণ না করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা কঠিন। বরং, কংগ্রেসের বৃত্তের বাইরের মানুষকে কংগ্রেসে আনতে হলে মোদীকে নিশানা করা ছাড়া বিকল্প নেই। কর্নাটক ভোটের আগে রাহুল লন্ডন সফরে গিয়ে দেশে গণতন্ত্র বিপন্নতার কথা বলেছিলেন। কর্নাটকে সুশীল সমাজও রাহুলের বক্তব্যকে সমর্থন করে। ভোটে কংগ্রেসের সুবিধা হয় তাতে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেসের অঙ্ক হল, আসন্ন রাজস্থান, ছত্তীসগড়, মধ্যপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার ভোটেও যেহেতু মোদীই বিজেপির মুখ তাই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর ব্যর্থতাগুলিকে বেশি করে মানুষের কাছে তুলে ধরা জরুরি। তাছাড়া, বছর ঘুরলে লোকসভার ভোট। তখন বিজেপির প্রচার আরও মোদীময় হবে। রাহুল দেশ ছাড়ার আগে তাঁর যুক্তরাষ্ট্র সফরের কোথায় কী বলবেন তা নিয়ে দলের ভোট কুশলীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে গিয়েছেন।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে নতুন করে পেগাসাস বিতর্ক অর্থাৎ ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি তাঁর সাংসদপদ চলে যাওয়া নিয়েও মুখ খুলেছেন। বলেছেন, "আমি ভাবতেও পারিনি এমন একটি অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হব।" তবে ওই ঘটনায় তিনি ভেঙে পড়েননি জানিয়ে রাহুল বলেন, "একদিক থেকে ভালই হয়েছে। আমি এখন অন্যত্র অনেক বেশি সময় দিতে পারছি।"

XS
SM
MD
LG