অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা মণিপুর নিয়ে তদন্ত কমিটি গড়বে কেন্দ্র


ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

জনজাতির দাঙ্গায় বিধ্বস্ত ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর। এই ঘটনা শুরু হওয়ার এক মাসের মাথায় মণিপুর নিয়ে তদন্ত কমিটি গড়ার কথা জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত হবে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন।

এছাড়া, রাজ্য ও জেলাস্তরে সরকারের উদ্যোগে শান্তি কমিটিও গঠন করা হবে, জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাতে সব সম্প্রদায়ের স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা ছাড়াও সরকারি পদাধিকারীরা থাকবেন।

চারদিনের সফরে মণিপুর গিয়েছিলেন অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার ১লা জুন দিল্লি ফিরেছেন তিনি। এর আগে সংঘাতে লিপ্ত সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে দাবি করা হয়েছিল, আপাতত রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হোক। সূত্রের খবর, বৈঠকে শাহ এই দাবি বিবেচনার আশ্বাস দেন। কিন্তু দিল্লি ফেরার আগে তিনি এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, দিল্লি ফিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সরকারের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাষ্ট্রপতি শাসনের মতো রাজনৈতিক পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

বুধবার শাহ গিয়েছিলেন মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া একটি ত্রাণ শিবিরে। ওই এলাকায় মেইতি এবং কুকি, দুই সম্প্রদায়েরই ঘরছাড়া মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। শাহ সেখানে কথা দেন, আপাতত ওই এলাকায় হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু রাখা হবে। চিকিৎসার প্রয়োজনে কাউকে ইম্ফলে নিয়ে যেতে হলে কপ্টার ব্যবহার করা হবে। এছাড়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতেও মালপত্র আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে কপ্টার।

সাংবাদিক বৈঠকে শাহ মণিপুরে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠার পর রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রভূত উন্নতি হয়েছিল বলে দাবি করেন। গত মাসে হিংসাত্মক ঘটনার পিছনে ছিল মণিপুর হাইকোর্টের একটি রায়। সেই রায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মৈতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলা হয়। শাহ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, "ওই রায় বড় তাড়াহুড়ো করে দেওয়া হয়েছিল।"

প্রসঙ্গত, ১৮ এপ্রিলের রায়ের প্রতিবাদে ৩ মে কুকি জনজাতিদের ছাত্র ইউনিয়নগুলি সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেয়। চূড়াইচাঁদপুর জেলায় মিছিল আক্রান্ত হলে তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে কুকি ও মৈতেইরা। এখনও পর্যন্ত ৮০ জন নিহত হওয়ার কথা সরকারিভাবে স্বীকার করা হয়েছে। বেসরকারি সূত্রের দাবি, মৃতের সংখ্যা অগুণতি। বহু দেহ লোপাট করে দেওয়া হয়েছে। আগুনে পুড়িয়ে মারাদের পরিচয় ও সংখ্যাও জানা যায়নি।

অমিত শাহ মণিপুর সফরে বিবদমান দুই শিবিরের সঙ্গেই আলাদা করে বৈঠক করেছেন। কুকি জনগোষ্ঠীর আশু দাবি রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে সিবিআইকে দিয়ে অশান্তির ঘটনার তদন্ত করা হোক। তদন্ত থেকে রাজ্য প্রশাসনকে পুরোপুরি দূরে রাখার দাবি তোলেন কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ। শাহ পাল্টা পনেরো দিন সংঘর্ষ বিরতির প্রস্তাব দেন। বলেন, "সব দাবিই বিবেচনা করা হবে। তবে আগে হিংসা ছাড়তে হবে।"

XS
SM
MD
LG