অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সড়ক দুর্ঘটনায় সিলেটে ১৪ জন এবং পাবনায় ২ জন নিহত


সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নাজির বাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বুধবার (৭ জুন) সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলেই মারা যান ১১ জন। পরে হাসপাতালে মারা যান আরও ৩ জন। অন্যদিকে পাবনার ঈশ্বরদীতে মঙ্গলবার (৬ জুন) সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২ জন।

সিলেটে ট্রাক ও শ্রমিকবাহী পিকআপের মধ্যে সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত

সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নাজির বাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মালবাহী ট্রাক ও শ্রমিকবাহী পিকআপের মধ্যে সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলেই মারা যান ১১ জন। পরে হাসপাতালে মারা যান আরও ৩ জন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।

বুধবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে নাজির বাজার এলাকার কুতুবপুর নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের সিলেট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দুর্ঘটনায় নিহত ১৪ জনের পরিচয় পা্ওয়া গেছে। তারা হলেন—সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত সজিব আলীর ছেলে রশিদ আলী (২৫), শান্তিগঞ্জ উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের মৃত হারুন মিয়ার ছেলে দুলাম মিয়া (২৬), একই উপজেলার বাবনগাঁ গ্রামের মৃত ওয়াহাব আলীর ছেলে শাহিন মিয়া (৪০), দিরাই উপজেলার আলীনগর গ্রামের মৃত শিশু মিয়ার ছেলে হারিস মিয়া (৬৫), হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার হলদিউড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী আমিনা বেগম (৪৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত মফিজ মিয়ার ছেলে সায়েদ নূর (৫০), শান্তিগঞ্জ উপজেলার তলেরতন গ্রামের মৃত আওলাদ উল্লার ছেলে আওলাদ হোসেন (৬০), দিরাই উপজেলার পাথারিয়া গ্রামের মৃত ছলিম উদ্দিনের ছেলে একলিম মিয়া (৫৫), গচিয়া গ্রামের বারিক উল্লার ছেলে সিজিল মিয়া (৫৫), ভাটিপাড়া গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে সৌরভ মিয়া (২৭), নেত্রকোনার ভারহাট্টা উপজেলার দশদার গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে আওলাদ মিয়া (৩০), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের শমসের নুরের মেয়ে মেহের (২৪), দিরাই উপজেলার মধুপুর গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে দুদু মিয়া (৪০), একই গ্রামের শাহজাহানের ছেলে বাদশা (২২)।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিলেট মহানগর থেকে পিকআপে প্রায় ৩০ জন নারী-পুরুষ নির্মাণ শ্রমিক জেলার ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার যাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নাজির বাজার এলাকার কুতুবপুর নামক স্থানে পৌঁছালে মুন্সীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী মালবাহী ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১১ জন মারা যান।

খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ এবং সিলেট ও ওসমানীনগরের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় হতাহতদের উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

ঘটনাস্থলে ১১ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান। আর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জুয়েল আহমদ সকাল পৌনে ৯টার দিকে জানান, হাসপাতালে মারা গেছেন আরও ৪ জন।

এদিকে, দুর্ঘটনার পর নাজির বাজারের দুই 'দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় তিন ঘণ্টা পর সাড়ে ৮টার দিকে মহাসড়কটিতে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

মনিরুজ্জামান বলেন, “আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলেই ছুটে যাই। সকাল ৭টা পর্যন্ত ১১ জনের লাশ এবং অন্তত ১০ জন গুরুতর আহতকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে পাঠাই”।

তিনি আরও বলেন, “'আমরা আসার আগে স্থানীয়রা আহত আরও কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা আশপাশে সন্ধান চালাচ্ছি আর কোনো হতাহত পড়ে আছে কি না দেখার জন্য”।

পাবনায় সিএনজি-ট্রাক্টর মুখোমুখি সংঘর্ষে বাবা-ছেলে নিহত

পাবনার ঈশ্বরদীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাবা ও ছেলে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার সিএনজি চালকসহ আর ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (৬ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের তেতুলতলা ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন-রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের রফিকুল আলমের ছেলে মাহবুবুর আলম (৪০) ও তাঁর দেড় বছর বয়সী ছেলে আব্দুর রহমান। নিহত মাহবুবুর আলম পাবনায় স্কয়ার গ্রুপে কর্মরত ছিলেন।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পাকশী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশীষ কুমার স্যানাল জানান, মঙ্গলবার রাতে পারিবারিক একটি জানাজার অনুষ্ঠান শেষ করে মাহবুবুর আলম তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সিএনজি করে পাবনা যাচ্ছিলেন।

ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া তেতুলতলা তিন রাস্তার মোড় নামক রাস্তার বাঁকে পৌঁছানো মাত্র বিপরীতগামী টাক্টরের সঙ্গে সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বাবা ও ছেলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

খবর পেয়ে পাকশী হাইওয়ে পুলিশ এসে ২ জনের লাশ উদ্ধার করে এবং সিএনজি চালকসহ আহত ৩ জনকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

আশীষ কুমার স্যানাল জানান, পুলিশ ট্রাক্টরটি আটক করলেও চালক পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে পাকশী হাইওয়ে থানায় সড়ক দুর্ঘটনা আইনে একটি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।

স্বজনদের কোনো অভিযোগ না থাকায় বুধবার (৭ জুন) সকালে ময়নাতদন্ত ছাড়া নিহতের স্বজনদের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

XS
SM
MD
LG