উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুরের দুই বিবদমান জনজাতির মধ্যে অশান্তির উত্তাপ পৌঁছে গেল রাজধানী দিল্লিতে। বুধবার ৭ জুন সকালে কুকি জনগোষ্ঠীর লোকেরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সরকারি বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায়।
অমিত শাহ জেড প্লাস নিরাপত্তা পান। তাঁর বাংলো সর্বদা কমান্ডো বেষ্টিত থাকে। তারপরও বিক্ষোভকারীরা বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে যায়। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকে চারজনকে শাহের বাংলোর ভিতরে নিয়ে যায় পুলিশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন। বাকিদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় যন্ত্ররমন্তরে।
বুধবার সকালেই গোটা দেশ জানতে পারে গত রবিবার ৪ জুন মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের পশ্চিম প্রান্তে কীভাবে গুলিবিদ্ধ সাত বছরের এক শিশুসহ তিন জনকে অ্যাম্বুলেন্সে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে মইতেই জঙ্গিরা। নিহতদের মধ্যে দু’জন মৈতেই হলেও তাঁরা খ্রিস্টান। সেই কারণে মইতেইদের রোষের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। ঘটনাটি পুলিশের উপস্থিতিতে ঘটেছে এবং অদূরে অসম রাইফেল্সের ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও হামলা ও মৃত্যু আটকানো যায়নি। স্বভাবতই কুকিরা এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। আবার গত শনি ও রবিবার কুকিদের আক্রমণে প্রাণ যায় মইতেই সম্প্রদায়ের পাঁচ ব্যক্তির।
গত ৩ মে থেকে শুরু হওয়া হিংসার কোনও বিরাম নেই পাহাড়ি রাজ্যটিতে। অথচ, এই মুহূর্তে কাশ্মীরের পর মণিপুরেই সবচেয়ে বেশি প্রায় ১৪ হাজার সেনা মোতায়েন আছে। এছাড়া অসম রাইফেলস, সিআরপিএফ, সিআইএসএফের বিপুল সংখ্যায় জওয়ান টহল দিচ্ছে সেই রাজ্যে। তারপরও একের পর এক হামলার ঘটনায় পরিস্থিতির ক্রমে অবনতি হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ গত সপ্তাহে চারদিনের জন্য মণিপুরে ছিলেন। অশান্তি শুরুর ২৬ দিনের মাথায় তাঁর সফরে কুকি এবং মইতেই গোষ্ঠীর লোকেরা শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা দিয়েছিল। যদিও শাহ দিল্লি ফিরে যেতেই মণিপুর ফের আগের মতো অশান্ত হয়ে উঠেছে।
দিল্লিতে এর আগে কুকি এবং মইতেই সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা নিজেদের দাবি নিয়ে বিক্ষোভ আন্দোলন করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি আগে হয়নি।