অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আওয়ামী লীগ নেতারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন—বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল

আন্দোলনরত বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীযতাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা আগামী নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক আলোচনা নিয়ে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতে খুব ভালো পারে। আওয়ামী লীগের তিন নেতা সংলাপ নিয়ে তিনভাবে কথা বলেছেন। নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের জন্য চলমান আন্দোলন এবং বর্তমানে বিদ্যুতের যে সমস্যা, সেটাকে ডাইভার্ট করার লক্ষ্যে তারা অন্য ইস্যু তৈরি করছে”।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংকট, উত্তরণ প্রয়াসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। বিএনপিপন্থী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু আগামী সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে সংলাপের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য দিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছেন। পরে আওয়ামী লীগের মুখপাত্র বলেছেন, এটা তাদের বক্তব্য নয়। আবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সংলাপের বিকল্প নেই। তাদের মূল লক্ষ্য মানুষকে বিভ্রান্ত করা”।

তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও তাদের দাবি থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরানোর চেষ্টা করছেন।

আমির হোসেন আমু ও হাছান মাহমুদের বক্তব্য

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু মঙ্গলবার (৬ জুন) বলেছিলেন যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আন্দোলনে থাকা বিএনপির সঙ্গে সরকারের আলোচনা হতে পারে। বিকেলে রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত ১৪ দলের সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। আমির হোসেন আমু বলেছিলেন, “বিএনপির সঙ্গে যেকোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে”।

তিনি আরও বলেন, “আলোচনা ছাড়া অন্য কোনো পন্থায় সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। আর অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় আসার পাঁয়তারা করলে প্রতিরোধ করবে জনগণ”। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানে বিএনপির সঙ্গে সরকার আলোচনা করতে রাজি বলে উল্লেখ করে তিনি।

আমির হোসেন আমু বলেন, “প্রয়োজনে জাতিসংঘের প্রতিনিধির সামনে বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসে রাজনৈতিক সংকট ও আগামী নির্বাচনের সুরাহা করতে চায় আওয়ামী লীগ”। তিনি আরও বলেন, “সংবিধানের মধ্যে থেকে, গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে আলোচনার দরজা সবসময় খোলা। বিএনপির সঙ্গে যেকোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে, আলোচনার দ্বার সবসময় খোলা আছে”।

এদিকে আমির হোসেন আমুর এই বক্তব্যের পরদিন বুধবার (৭ জুন) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিএনপির (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) সঙ্গে আলোচনায় বসা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর বক্তব্যটি তাঁর ব্যক্তিগত মন্তব্য।

হাছান মাহমুদ বলেন, এ বক্তব্য নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় ফোরামে কোনো আলোচনা হয়নি। এমনকি ১৪ দলেও আলোচনা হয়নি। … নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। তারা নির্বাচনের রেফারি। তারা যদি সংলাপে ডাকে আমরা যাব।

হাছান মাহমুদ বলেন, তাঁর (আমির হোসেন আমু) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন কাগজে বা গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে, তিনি ঠিক সেভাবে বলেননি। যেভাবেই আসুক এটি তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত। এটি দল, সরকার এমনকি ১৪ দল কোথাও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি।

XS
SM
MD
LG