বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সোমবার (১২ জুন)। ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করছেন। দুই সিটিতেই সকল কেন্দ্রে ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ করা হবে।
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনকে সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রবিবার (১১ জুন) বেলা ১১টা থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ শুরু হয়। নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর ১১ প্লাটুন সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। এবার খুলনা সিটির সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ১২ জুন ভোট গ্রহণ করা হবে।
রবিবার সকাল থেকে বিজিবি সদস্যরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে টহল শুরু করেছেন। খুলনা জেলা প্রশাসক খোন্দকার ইয়াসির আরেফিন বলেন, “খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিরাপত্তার জন্য বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। চারদিন তারা দায়িত্ব পালন করবেন। বিজিবির টহল টিমের সঙ্গে ১১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।”
খুলনা সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন বলেন, “১২ জুনের নির্বাচনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী এবং ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৩৬ জন ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে মধ্যে ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে ৩১টি ওয়ার্ডে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন ও পুরুষ ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন। সোমবার ভোটগ্রহণ শেষে ফল ঘোষণা করা হবে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তন থেকে।
এদিকে, বরিশাল সিটি নির্বাচন উপলক্ষে দেড় হাজার ইভিএম-সহ নির্বাচনী সরঞ্জামাদি বিতরণ করা হয়েছে। রবিবার (১১ জুন) দুপুরে শহরের শিল্পকলা একাডেমি থেকে মেশিন বুঝে নেন প্রিজাইডিং অফিসার। প্রথমবারের মত এবার বরিশালের সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে। ১২৬ টি কেন্দ্রের ৮শ ৯৪ টি বুথে ১২ জুন ভোটগ্রহণ করা হবে।
বরিশাল নির্বাচনী অফিস জানিয়েছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৩০ টি ওয়ার্ডে প্রিজাইর্ডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন ১২৬ জন। এছাড়া সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৮৯৪ জন। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, “ভোটের পরিবেশ শতভাগ সুষ্ঠু আছে।” ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, নির্বাচন উপলক্ষে, বরিশাল নগরীকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। সাড়ে ৪ হাজার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে দশ প্লাটুন বিজিবি সদস্য। এছাড়া, ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং দশ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।
বরিশাল সিটি নির্বাচনে ৭ মেয়র, ১১৯ জন সাধারণ ও ৪২ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। এর মধ্যে, ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন পুরুষ ও ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন নারী ভোটার রয়েছেন।