বাংলাদেশের বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমের ওপর হামলা-কে ‘কাপুরুষোচিত’ বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, “এ ঘটানায় আবারো প্রমাণিত হয়েছে যে, বর্তমান সরকার অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন কখনোই সম্ভব নয় “
সোমবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব ঘটনার নিন্দা করেন এবং এর জন্য ক্ষমতাসীন আ্ওয়ামী লীগের 'ক্যাডারদের' দায়ী করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্য দিবালোকে একজন ধর্মীয় নেতা এবং একজন মেয়র প্রার্থীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা কাপুরুষোচিত। এই হামলা আবারো উন্মোচিত করেছে যে আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী ছাড়া বিরোধী দলের কোনো প্রার্থীকে সহ্য করতে পারে না।”
তিনি বলেন, “ক্ষমতাসীন দলের যে কোনো উপায়ে তাদের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করার মনোভাব রয়েছে।” সরকারের নির্দেশের বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারে না বলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কড়া সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়া এ ধরনের নির্বাচন করতে ইসি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।যখন একজন মেয়র প্রার্থী ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের দ্বারা আক্রান্ত হন, তখন সাধারণ ভোটারদের নিরাপত্তা কোথায়? এমন নির্বাচনী পরিবেশের কারণে বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়নি।”
তিনি বলেন, “আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই আওয়ামী লীগের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।” ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করিমের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফয়জুল করিমের ওপর হামলাকারী আটক
এদিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর, বরিশাল সিটি নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনায় যুক্ত মূল অপরাধীকে সোমবার (১২ জুন) আটক করা হয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন সোমবার রাত পৌনে ৯ টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অভিযুক্তের নাম স্বপন বলে জানান তিনি।
আনোয়ার হোসেন বলেন, “মূল হামলাকারী স্বপনকে আটক করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো প্রার্থী বা ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।”
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে বরিশাল নগরীর চৌমাথা এলাকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনি-সহ কয়েকজন আহত হন।
অন্যদিকে, বরিশালের নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। সোমবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় বরিশালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের আমীর সৈয়দ রেজাউল করিম এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন,“প্রশাসন যখন দলীয়করণ করা হয়, তখন সেখানে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করতে পারিনা। যার কারণে এই সরকার পতনের দাবি জানাচ্ছি। আমরা বারবার সরকার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি)-কে বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, কিন্তু তারা তাদের চরিত্র থেকে ফিরে আসেনি।”
সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, “সেই সঙ্গে ইসির পদত্যাগ দাবি করছি। আর, সিলেট ও রাজশাহী নির্বাচনে আমাদের প্রার্থী আছে। আমরা সেই নির্বাচনের প্রার্থীতা থেকে তাদেরকে বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছি। ফলে তারা আর ওই নির্বাচন করবে না। কারণ নির্বাচনের পরিবেশ নেই।”