অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের উত্তর-পূর্বে জনজাতি দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মণিপুরে শান্তি ফেরাতে বার্তা আরএসএস-এর


ভারতের উত্তর-পূর্বে জনজাতি দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মণিপুরে শান্তি ফেরাতে বার্তা আরএসএস-এর
ভারতের উত্তর-পূর্বে জনজাতি দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মণিপুরে শান্তি ফেরাতে বার্তা আরএসএস-এর

উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুরে শান্তি ফেরানোর আর্জি জানিয়ে লম্বা বিবৃতি দিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সেখানে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবালে।

অথচ গত রবিবার ১৮ জুন-ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে মণিপুর নিয়ে নীরব ছিলেন। অতীতে দেশে এই ধরনের অস্থির পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলতে প্রধানমন্ত্রী ‘মন কি বাত’-এ মুখ খুলেছেন। কিন্তু ব্যতিক্রম মণিপুর।

নরেন্দ্র মোদীর নীরবতা এবং আরএসএস-এর শান্তিবার্তা নিয়ে মুখ খুলেছে কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীকে ফের নিশানা করেছে তারা। কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, "আরএসএস-এর শান্তি-বিবৃতি কি প্রাক্তন প্রচারক মোদীকে মুখ খুলতে বার্তা নাকি, প্রধানমন্ত্রী তাঁর কর্তব্য আরএসএসকে আউটসোর্স করেছেন!"

হোসাবালের বিবৃতিতে অবশ্য কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকার সম্পর্কে কোনও কথা নেই। সেনা, আধা সেনা এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্তব্যের কথাই প্রাধান্য পেয়েছে তাতে। পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, রাজনৈতিক তৎপরতার বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে সাধারণভাবে সঙ্ঘের বিবৃতিকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বার্তা হিসাবে বিবেচনার সুযোগ নেই।

মণিপুর নিয়ে কংগ্রেস কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে একাধিকবার উত্তর-পূর্বের রাজ্যটির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র সফররত রাহুল গান্ধীও একাধিকবার পাহাড়ি রাজ্যটির অচলাবস্থা নিয়ে সরব হন। হোসাবালের বিবৃতি নিয়ে মোদীকে নিশানা করেছেন কংগ্রেসের জন যোগাযোগ দফতরের প্রধান জয়রাম রমেশ।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, উত্তর-পূর্বে পায়ের নিচে মাটি ফিরে পেতে কংগ্রেস পরিকল্পিতভাবেই মণিপুর নিয়ে সক্রিয় হয়েছে। উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যের পার্টি নেতাদের বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কর্মসূচি নিতে।

ইতিমধ্যে কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইবোবি সিং দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু দশ দিন পরেও প্রধানমন্ত্রীর দফতর তাঁর চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেনি। ইবোবির নেতৃত্বে ১২ দলের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি দেন। ২০ জুন মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়ার কথা। ফলে বিদেশ থেকে ফিরে না আসা পর্যম্ত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানা সম্ভব নয়।

হোসাবালের বলেছেন, "গত ৪৫ দিন ধরে মণিপুরে যে ক্রমাগত সহিংসতা চলছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। লাই হারাওবা উৎসবের সময় ৩ মে, চুড়াইচাঁদপুরে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশের পরে মণিপুরে যে সহিংসতা এবং অনিশ্চয়তা শুরু হয়েছিল তার নিন্দা করা উচিত।"

তিনি আরও বলেছেন, "এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে যারা পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহযোগিতার শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করে আসছে তাদের মধ্যে শুরু হওয়া অস্থিরতা ও সহিংসতা এখনও বন্ধ হয়নি।"

হোসাবালে আরও যোগ করেছেন, "সঙ্ঘ স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সামরিক বাহিনী এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি সহ সরকারের কাছে এই বেদনাদায়ক সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সমস্ত সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সহ বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রীর নির্বিঘ্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য আবেদন করছে। শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখা দরকার।"

XS
SM
MD
LG