পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বৃহস্পতিবার ২৯ জুন সকালে উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে পৌঁছেছিলেন। আগামীকাল শুক্রবার ৩০ জুন-ও অশান্ত পাহাড়ি রাজ্যটিতে থাকবেন তিনি। গত ৩ মে মণিপুরে জাতিদাঙ্গা শুরুর পর এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক নেতা মণিপুরের দাঙ্গা পীড়িতদের মুখোমুখি হবেন। গোলমাল শুরুর ২৬ দিনের মাথায় কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চারদিনের সফরে মণিপুরে গেলেও তিনি মূলত ইম্ফলে প্রশাসনিক বৈঠক নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘটনার ৫৫ দিন পরও মণিপুর নিয়ে একটি কথাও এখনও পর্যন্ত বলেননি।
রাহুল গান্ধী সকালে ইম্ফলে পৌঁছে সবচেয়ে অশান্ত এলাকা চূড়াইচাঁদপুরে গিয়েছেন। সেখানে দু’টি ত্রাণ শিবির পরিদর্শনের পর স্থানীয় কলেজ ময়দান ও কমিউনিটি হলে তাঁর জনসভা করার কথা। আগামীকালও তাঁর দুটি ত্রাণ শিবিরে যাওয়ার কথা। সেই সঙ্গে জনসভাও করবেন।
শনিবার ২৪ জুন অমিত শাহের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে একাধিক দল মণিপুরে সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে শান্তি কমিটি পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ তখন জানিয়ে দেন, এখনও পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। এরপরই কংগ্রেস রাহুল গান্ধীর সফর ঘোষণা করে। পাটনার বিরোধী বৈঠকে যোগ দেওয়া একাধিক দল রাহুলের সফরকে স্বাগত জানিয়েছে।
অন্যদিকে, পাল্টা তোপ দেগেছে বিজেপি। রাহুলের বিরুদ্ধে আপত্তিজনক পোস্ট দেওয়ায় বুধবারই কর্নাটক পুলিশ বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে। রাহুলকে আক্রমণে বিজেপি আজ সেই মালব্যকেই এগিয়ে দিয়েছে।
রাহুল ইম্ফল বিমানবন্দরে নামতেই মালব্য প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতিকে ‘সুবিধাবাদী রাজনীতিক’ বলে তোপ দেগেছেন। টুইটে তিনি লেখেন, "কংগ্রেস মণিপুরে ক্ষমতায় থাকাকালে রাহুল গান্ধী কি কখনও ওই রাজ্যে গিয়েছেন? এখন গিয়েছেন রাজনীতির সুবিধা নিতে। তিনি মোটেও শান্তির মসিহা নন।"
শুধু মালব্য নন, বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলিতে কর্মী-সমর্থকেরাও রাহুলের সফর নিয়ে সরব হয়েছেন। পাল্টা সক্রিয় হয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস শিবির বলেছে, শান্তির বার্তা নিয়ে মণিপুর গিয়েছেন রাহুল গান্ধী।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, মণিপুর নিয়ে দিল্লিতে রাহুল রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইবোবি সিংহের মুখ থেকে বিস্তারিত শুনেছেন। বুঝে নিয়েছেন মূল সমস্যা। রাজ্য কংগ্রেস চলতি বিতর্কে বিবদমান মেইতেই এবং কুকি, কোনও পক্ষের হয়েই কথা বলেনি। রাহুল গান্ধীও দুই সম্প্রদায়ের আক্রান্তদের কাছেই যাবেন।