ভারতের মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতির দিকে এই মুহূর্তে সারা দেশের নজর। সোমবার ৩ জুলাই মহারাষ্ট্রের বিরোধী জোট মহা বিকাশ আগারির তরফে ঐক্যের বার্তা দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, মহারাষ্ট্র্বের প্রধান দল এনসিপি-তে ভাঙন সেই দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। রাজ্যে জোটের সঙ্গে শরিক দলের ভাঙ্গা গড়ার কোনও সম্পর্ক নেই।
কিন্তু মঙ্গলবার ৪ জুলাই সকালেই বিরোধী দলনেতার পদ দাবি করেছে কংগ্রেস। মঙ্গলবার এই বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছে রাজ্যের কংগ্রেস শিবির। উপস্থিত থাকছেন এআইসিসি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা এইচকে পাতিল এবং রাজ্যের প্রবীণ নেতা পৃথ্বীরাজ চৌহান।
গত শনিবার পর্যন্ত মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার। তিনি দল ভাঙিয়ে গত রবিবার উপ-মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর একদিন রবিবার পদটি ফাঁকা ছিল। এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার সোমবার প্রবীণ বিধায়ক জিতেন্দ্র আহাদকে বিরোধী দলনেতা করেন। ওই পদে বসেই অজিত পাওয়ারদের বিধানসভার সদস্যপদ খারিজের সুপারিশ করে স্পিকারকে চিঠি দেন আহাদ। কংগ্রেস মঙ্গলবারই বিরোধী দলনেতার পদটি দাবি করে বসায় আজই আহাদের ওই পদে মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মহারাষ্ট্র বিধানসভায় কংগ্রেসের ৪৫ জন বিধায়ক আছেন। গত বছর একনাথ শিন্ডে দল ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ার আগে শাসক শিবিরে সবচেয়ে বড় দল ছিল শিবসেনা। এখন বিরোধী শিবিরে থাকা শিবসেনার উদ্ধব গোষ্ঠীর হাতে ১৪ জন বিধায়ক আছেন। ফলে বিরোধী শিবিরের সবচেয়ে বড় দল হয়েছিল এনসিপি।
রবিবার অজিত পাওয়ারের বিদ্রোহের জেরে এনসিপি এক ধাক্কায় তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছে। এই সুযোগে বিরোধী দলনেতার পদ দাবি করে বসেছে কংগ্রেস। বিশেষজ্ঞদের মতে কংগ্রেসের জন্য এটাই অনেক বড় প্রাপ্তি। দীর্ঘদিন কংগ্রেস মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে গুরুত্বহীন অবস্থায় কাটাচ্ছে। শাসক-বিরোধী কোনও ক্ষেত্রেই কংগ্রেস শিবিরের হাতে রাজ্য রাজনীতির নিয়ন্ত্রক হওয়ায় সুযোগ ছিল না।
পর্যবেক্ষকদের মতে, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হল বিজেপি এখনও কংগ্রেস শিবিরের বিধায়কদের ভাঙাতে পারেনি। শিবসেনা ও এনসিপিকে বিজেপি দু' টুকরো করে দেওয়ায় বিরোধী শিবিরে কংগ্রেসের গুরুত্ব তাই বেড়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটে বিরোধী শিবিরের নেতৃত্বও তাই অনেকটাই কংগ্রেস শিবিরের হাতে থাকবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কংগ্রেস হাইকমান্ড তাই মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলনেতার পদটি নিয়ে খুবই আগ্রহী। আজই ওই পদে নাম ঘোষণা হয়ে গেলে তিনদিনের মধ্যে তিনজন বিরোধী দলনেতার চেয়ারে বসবেন।