ভারতের বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে রেলের চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে চার্জশিট পেশ করল ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। চার্জশিটে নাম আছে তাঁর স্ত্রী বিহারের আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়িদেবী এবং তাঁদের ছেলে তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের।
এই দুর্নীতিতে লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজ্বপ্রতাপ বাদে গোটা পরিবারের নাম জড়িয়েছে। এখনও তদন্ত চলছে বড় মেয়ে মিসা ভারতী সহ বিবাহিত চার কন্যার। সকলেরই আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। ফলে সিবিআই চাইলে যে কোনওদিন তাঁদের গ্রেফতার করতে পারে।
সোমবার ৩ জুলাই জমা করা চার্জশিটের ভিত্তিতে শুনানির পর লালুপ্রসাদ এবং পরিবারের বাকিদের জেলে যেতে হবে কিনা তা নিয়েই এখন জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। লালুপ্রসাদ যাদবের পার্টি রাষ্ট্রীয় জনতা দল সিবিআইয়ের চার্জশিটকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলছে। শরিক জনতা দল ইউনাইটেডকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে তারা।
পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির মামলায় অসুস্থতার কারণে লালুপ্রসাদ যাদব এখন জামিনে মুক্ত। তিনি সুস্থ হয়ে ওঠায় ওই মামলাতেও তাঁকে ফের জেলে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছে সিবিআই। লোকসভা ভোটের আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে ফেরাতে চাইছে মোদী সরকার, এই অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
২০০৪-থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত রেলমন্ত্রী থাকাকালে লালুপ্রসাদ বিহারের বহু বেকার ছেলেমেয়েকে রেলে চাকরি দিয়েছিলেন। অভিযোগ, বিনিময়ে তাদের জমি-জায়গা অল্প দামে রাবড়ি দেবী, মিসা, তেজস্বী এবং লালুপ্রসাদের ঘনিষ্ঠ কিছু লোকজনের কাছে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় চাকরি প্রাপকেরা। জমির বাজারমূল্যের তুলনায় নামমাত্র দামে জমি হাতিয়ে লালুপ্রসাদের পরিবার বিপুল টাকা উপার্জন করেছে বলে সিবিআইয়ের দাবি।
এই অভিযোগে বছর পাঁচেক আগে দায়ের হওয়া মামলায় তথ্যপ্রমাণের অভাবে লালুপ্রসাদকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছিল সিবিআই। গত বছর সেই মামলা নতুন করে শুরু করেছে তাঁরা। আদালতে সিবিআই দাবি করে তাঁদের কাছে অভিযোগের সপক্ষে বেশ কিছু নথিপত্র এসেছে।
আদালতের অনুমতি নিয়ে মামলা শুরু করে ফের তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। লালুপ্রসাদ ও বাকি অভিযুক্তদের আশঙ্কা সিবিআই তাঁদের গ্রেফতার করতে পারে। সেই আশঙ্কায় আইনজীবী মারফত দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালতের কাছে আগাম জামিন চেয়েছিলেন তাঁরা। আবেদন মঞ্জুর হয়নি।