অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের মহারাষ্ট্রে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারকে পেছনে ফেলে সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার


ভারতের মহারাষ্ট্রে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারকে পেছনে ফেলে সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার
ভারতের মহারাষ্ট্রে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারকে পেছনে ফেলে সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার

ভারতের মহারাষ্ট্রের রাজনীতি নিয়ে টানটান উত্তেজনার আঁচ গত কয়েক দিনে ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের রাজনৈতিক মহলে। গত রবিবার ৩ জুলাইয়ের পর থেকেই মহারাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দল তথা এনসিপি ভাগাভাগি হয়ে গেছে। এক গোষ্ঠী প্রবীণ নেতা শরদ পাওয়ারের সমর্থনে রয়েছে, অন্য গোষ্ঠী সদ্য রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া অজিত পাওয়াকে সমর্থন জানাচ্ছে। ফলে মহারাষ্ট্রের এই দলটির রাশ কার হাতে থাকবে সেই নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। দলের নাম ও প্রতীকের উত্তরাধিকার কার দখলে থাকবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে মারাঠা রাজনীতিতে। শরদ পাওয়ার ও অজিত পাওয়ার সম্পর্কে কাকা-ভাইপো। বুধবার ৫ জুলাই তাই কাকা-ভাইপোর রাজনৈতিক লড়াইয়ের সাক্ষী থাকল জাতীয় রাজনীতি।

রবিবার এই বিদ্রোহের খবর প্রকাশ্যে এলেও এনসিপি-র মধ্যে ভাঙন বেশ কিছুদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে। জানা গেছে, গত শুক্রবারই এনসিপির ৪০ জন বিধায়ক জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে তাঁরা দাবি করেন, এনসিপি দলের ‘প্রেসিডেন্ট’ অজিত পাওয়ার-ই। তাই তাঁদের সঙ্গেই যেন থাকে দলের নাম ও প্রতীক।

তারপরই রবিবার অজিত পাওয়ার কাকা শরদের হাত ছেড়ে বিজেপি সমর্থিত সরকারে যোগ দেন এবং উপ- মুখ্যমন্ত্রীর পদ পান। বুধবার মহারাষ্ট্রে এনসিপি-র দুই গোষ্ঠীর লড়াই ছিল কাকা-ভাইপোর শক্তি প্রদর্শনের লড়াই।

সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বর্ষীয়ান রাজনীতিক শরদ পাওয়াকে হারিয়ে এগিয়ে গেলেন এনসিপির ‘বিক্ষুব্ধ’ গোষ্ঠীর নেতা তথা মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার। বর্তমানে এনসিপি-র প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন শরদ। কিন্তু সেই দলেরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর এক সূত্র দাবি করেছে, ভবিষ্যতে এনসিপি-র প্রেসিডেন্ট হবেন অজিত-ই। এমনকী জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা, যেখানে দলের নাম ও প্রতীক দাবি করা হয়েছে।

মহারাষ্ট্রে বুধবার দু’টি বৈঠক হয়। একটি বৈঠক ডেকে ছিলেন অজিত পাওয়ার, আর দ্বিতীয় বৈঠকের আহ্বায়ক ছিলেন শরদ পাওয়ার। অজিতের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ২৯ জন বিধায়ক। আর শরদের বৈঠকে এসেছিলেন ১৪ জন। এছাড়াও এনসিপি-র আরও ১০ জন বিধায়ক রয়েছেন যাঁরা এখনও প্রকাশ্যে কোনও পক্ষেই যোগ দেননি।

বুধবারের শক্তি পরীক্ষায় কাকা ৮৩ বছর বয়সি শরদ পাওয়ার বছর তেষট্টির ভাইপো অজিতের কাছে পরাজিত হলেও রাজনৈতিক মহল মনে করছে এনসিপি-র রাশ এখনও দলীয় সুপ্রিমোর হাতে। তবে সংখ্যার বিচারে কিছুটা পিছিয়েই রয়েছেন শরদ। যদিও তিনি বলেন, এইসব সংখ্যা ও নির্বাচনী প্রতীকের থেকেও মানুষের সমর্থনই বেশি প্রয়োজন। আর সেটা তাঁর কাছে রয়েছে।

শরদ বলেন, "এখন আলোচনা হচ্ছে কার কাছে কতজন বিধায়ক রয়েছেন। আমি এইদিকে একেবারেই মনোযোগ দিতে রাজি নই। একটা সময় ছিল আমার কাছে ৬২ জন বিধায়ক ছিল। কিন্তু পরে দেখা গেছে তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। আমার কাছে মাত্র ৬ জন বিধায়ক ছিলেন। আমরা নতুন মুখ নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করি এবং জিতি।"

গত বছর মহারাষ্ট্রে ঠিক একই রাজনৈতিক সঙ্কট দেখা গিয়েছিল। তখন মহারাষ্ট্রের অন্যতম দল শিবসেনার অন্দরে বিদ্রোহ দেখা দেয়। দলীয় বিধায়কদের নিয়ে দল ছাড়েন একনাথ শিন্ডে। উদ্ধব ঠাকরেকে কঠিন লড়াইয়ে মুখে পড়তে হয়। এখন যা পরিস্থিতি, এনসিপি-র ক্ষেত্রেও একই ঘটনা দেখা যাচ্ছে। তবে কী হতে চলেছে, তা ভবিষ্যতই বলবে।

XS
SM
MD
LG