ভারতে মহানগর কলকাতা ঘুরে অত্যন্ত আনন্দিত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেতি। বুধবার ৫ জুলাই সকালে বৃষ্টিভেজা কলকাতায় একটি হলুদ ট্যাক্সির সামনে পোজ দিয়ে ছবি তুলে ট্যুইট করেছিলেন তিনি। প্রথমে নমস্কার কলকাতা বলে সম্বোধন করে তিনি লিখেছিলেন, "অ্যাম্বাসেডরের সামনে অ্যাম্বাসেডর, এমন ছবি কখনও দেখেছেন?"
এরপর সিটি অফ জয় কলকাতা ঘুরে আপ্লুত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, "সংস্কৃতি আর সম্প্রীতির শহর কলকাতা।"
শহরের নানা দর্শনীয় স্থান দেখার পাশাপাশি, ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোও ঘুরে দেখেছেন তিনি। আর তারপরেই তিনি বলেছেন, এত রকমের সংস্কৃতি, ধর্মীয় মেলবন্ধন দেখে তিনি সত্যিই আপ্লুত। নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে ট্যুইট করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, “শহরের ইতিহাসের গভীরতা দেখলাম, ধর্মীয় স্থানগুলোর সম্প্রীতি দেখলাম, কলকাতা সত্যিই বিবিধের মাঝে মহামিলনের ক্ষেত্র।”
গত মঙ্গলবার ৪ জুলাই দিল্লির বঙ্গভবনে হঠাৎই হাজির হয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। দিল্লিতে অতিথিশালা বঙ্গভবনে তাঁকে রাজকীয় আপ্যায়ন করা হয়। তড়িঘড়ি সাজিয়ে তোলা হয় রাজ্য সরকারের অতিথিশালা। তাঁর আসার খবর পেয়েই হ্যালি রোডের বঙ্গভবনে এসে পৌঁছন রাজ্য সরকারের রেসিডেন্ট কমিশনার দফতরের আধিকারিকরা। রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানাতে যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়। তিনি বাংলার পদ চেখে দেখতে চেয়েছিলেন বলে একাধিক বাঙালি পদও রাঁধা হয়। আম পান্না থেকে ফিস ফ্রাই, শুক্তো থেকে লুচি-কষা মাংস, এমনকী শেষপাতে আমের চাটনি, রসগোল্লা, সন্দেশও খান তিনি।
তারপরে বুধবার কলকাতা ঘুরে দেখার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন এরিক গারসেতি। সে ব্যবস্থাও করা হয়। দিনভর শহরের নানা জায়গা ঘুরে দেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। বলেছেন, বাংলার ফুটবল, সংস্কৃতি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বাঙালি খাবার তাঁর খুবই পছন্দের। রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনে মুগ্ধ হন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন-এর পছন্দেই ভারতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ করা হয় এরিক গারসেতিকে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রথম সারির নেতা এরিক গারসেতি ২০১৩ সাল থেকে ২০২২-এর ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত টানা প্রায় এক দশক যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলেস-এর মেয়র পদে ছিলেন। সেই সময় নানা সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে প্রশংসা পেয়েছিল লস অ্যাঞ্জেলেস। বিশ্বের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে সহযোগিতার বন্ধন তৈরির কাজে সাফল্যও পেয়েছিলেন এরিক। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, পারস্পরিক সহযোগিতা, অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা বিষয়ক অংশীদারিকে আর শক্তপোক্ত করতে এরিক গারসেতির উপরেই সবচেয়ে বেশি ভরসা করেন বাইডেন।