বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে, দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের জিরোপয়েন্ট থেকে পানামা ওয়্যারহাউজ পর্যন্ত সড়কটির মেরামত কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়েছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায়, বাংলাদেশের হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের কাছে পাঠানো চিঠিতে তারা আরো জানিয়েছেন, “বেহাল ও অনুপযোগী সড়কটি অতিদ্রুত চলাচল উপযোগী করতে হবে। না হলে যেকোন সময় বাংলাদেশে সকল ধরণের পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হবে।”
এলাকার ব্যবসায়ী ও অধিবাসিরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দাদের আন্দোলন ও দাবির প্রেক্ষিতে, হিলি স্থলবন্দরের প্রধান সড়ক, হিলি চেকপোস্টের জিরো পয়েন্ট থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত সোয়া ২ কিলোমিটার চারলেন করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
এর পর গত বছরের ডিসেম্বরে, ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢালাই কাজ শুরু হয়। শুরু থেকেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠিান নির্মাণ কাজ করা নিয়ে গড়িমসি করে আসছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। তারা জানান, একমাস কাজ করলে, ৩ মাস বন্ধ রাখা হয়। এ কারণে, এই সড়ক দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনসহ যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। চলতি বর্ষায় এই ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।মাঝে-মধ্যেই পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে যাচ্ছে।
এই অবস্থায়, ভারতের ব্যবসায়ীরা সড়কটির মেরামত কাজ দ্রুত শেষ করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচল রাখতে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়েছেন।
যোগাযোগ করা হলে ভারতের হিলি এক্সপোটার্স অ্যান্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজেশ আগরওয়াল জানান, “আমরা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়ে বলেছি, হিলি স্থলবন্দরের চেকপোস্ট গেট থেকে পানামা ওয়্যাহাউজ পর্যন্ত সড়ক দ্রুত যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে।”
তিনি জানান, “সড়কটি এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে আমাদের চালক ও সহকারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক (লড়ি) চালাচ্ছেন। প্রতিদিন কোন না কোন পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে পড়ছে। এতে করে দুই দেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এই অবস্থায় ট্রাক চালক ও সহকারীরা রপ্তানি পণ্য নিয়ে হিলি দিয়ে বাংলাদেশে যেতে চাইছেন না।”
রাজেশ আগরওয়াল বলেন, “আমরা ব্যবসায়ী, ট্রাক মালিক ও চালকদের পক্ষে, বাংলাদেশ সরকার ও ব্যবসায়ীদের কাছে দাবী জানাচ্ছি অতিদ্রুত সড়কটি পুনর্র্নিমাণ কাজ শেষ করতে হবে। না হলে যেকোন সময় বাংলাদেশে রপ্তানি পণ্য পরিবহণ বন্ধ করে দেয়া হবে।”
হিলি স্থলবন্দর ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান লিটন অভিযোগ করেন, “সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ ফেলে রেখেছে। কাজ নিয়ে চরম গাফিলতি করছে। এখন বর্ষাকাল সড়কটির মেরামত কাজ সম্পন্ন না হলে আমদানি-রপ্তানি বানিজ্যে বিপর্যয় দেখা দেবে।”বন্দরের বাংলাহিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জামিল হোসেন নিশ্চিত করেছেন যে তারা ভারতের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন।তিনি বলেন, “হিলি স্থলবন্দরের প্রধান সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এ কারণে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সড়কটি সংস্কার করা জরুরি।”
দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আনফ সরকার জানান, “আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে, সড়কের চারলেনের মধ্যে দুই লেন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। এতে সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে।”