বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে না বলেই স্বৈরাচার ও সামন্তবাদ পছন্দ করে।” মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে দলের নারী নেত্রী ও কর্মীদের এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ত্রুটিপূর্ণ ও 'একতরফা' নির্বাচন করে দুই দফায় গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে বলেই, নির্বাচন ও মানবাধিকার নিয়ে কথা বলতে, বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসছে।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের একটি বৈশিষ্ট্যগত সমস্যা আছে। তা হলো, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা একনায়কত্ব ও সামন্ততন্ত্র পছন্দ করে। তারা মনে করে যে তারা ছাড়া দেশে আর কেউ নেই এবং তারাই দেশের একমাত্র মালিক।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক যে দেশে গণতন্ত্র নেই এবং রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, “প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন গণতান্ত্রিক চর্চা সমুন্নত রাখার মূল উপাদান। কিন্তু, এদেশের শাসকরা গণতন্ত্রের কথা বললেও, কখনোই তা চর্চা করেন না।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘আজ (১১ জুলাই) একটি আমেরিকান প্রতিনিধি দল আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি দল ইতোমধ্যে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও নির্বাচন সম্পর্কে জানতে দেশে এসেছে। তারা বাংলাদেশে কেন আসে? কারণ এখানে কোনো গণতন্ত্র নেই এবং কোনো (বিশ্বাসযোগ্য) নির্বাচন নেই এবং এখানে নির্বাচন (সুষ্ঠুভাবে) হয় না।”
একটি ভালো নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের সমান সুযোগ থাকা দরকার বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির এক দফা গুরুত্ব বহন করে না: হাছান মাহমুদ
এদিকে, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “বিএনপি মাঝে মধ্যে এক দফার আন্দোলন ঘোষণা করে। তাই, তাদের নতুন করে এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা বিশেষ কোনো গুরুত্ব বহন করে না। তবে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে থাকবো, দেশে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার সুযোগ দেবো না।”
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ১২ জুলাই বিএনপির একদফা দাবি ঘোষণা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা অতীতেও দেখেছি বিএনপি যখনই কর্মসূচি ঘোষণা করে, তখনই তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়, জনজীবনে ভোগান্তি ঘটায়। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।”
তিনি বলেন, “সেই সুযোগ আমরা দেবো না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল, আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকবো, জনগণের পাশে থাকবো।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল এখন দেশে অবস্থান করছে। এই সময় তাদের এ ধরনের কর্মসূচি দেয়ার অর্থ হচ্ছে, তারা আসলেই কর্মসূচিগুলো জনগণকে দেখাতে চায় না, বিদেশিদের দেখাতে চায়। বিদেশিরা তাদের শক্তি সামর্থ্য নিয়ে সন্দিহান। তারা শক্তি দেখানোর জন্য চেষ্টা করছে মাত্র।”
তিনি বলেন, “বিদেশিদের কাছে বিএনপির শক্তি প্রদর্শনের কোনো প্রয়োজন তো নেই। তাদের যদি কোনো অনুযোগ, অভিযোগ থাকে; তা জনগণের কাছে বলতে হবে। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য, তাদের সমস্ত কর্মসূচি, সমস্ত কথাবার্তা হচ্ছে বিদেশিদের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টাপ্রসূত। এটা, রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের দেউলিয়াত্ব প্রকাশ করে।”