বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়াকে স্বাগত জানান। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।
উজরা জেয়ার এই সফরের উদ্দেশ্য হলো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সংক্রান্ত আলোচনা করা; আরো মুক্ত, উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক এর জন্য অবদান রাখা এবং সমগ্র অঞ্চল জুড়ে উদ্বাস্তু ও আশ্রয় প্রদানকারী সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক সহায়তা জোরদার করা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুসারে, আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটসহ মানবিক উদ্বেগ; শ্রম সমস্যা; মানবাধিকার; অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই-সহ নানা বিষেয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
বুধবার (১২ জুলাই) তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। রোহিঙ্গা ইস্যু তার সফরের অন্যতম অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের ‘অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা’।সোমবার (১০ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, “৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে আমাদের এই আকাঙ্ক্ষা থাকছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে বারবার তার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।”
রাশিয়া, চীন ও ইরানের গণমাধ্যমের বিবৃতি-এর কথা উল্লেখ করে মিলার বলেন, “আমি জানি না, কেন কেউ আমাদের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান-এ আপত্তি জানাবে।” তিনি বলেন, “আমরা এক রাজনৈতিক দলকে রেখে অন্য রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। আমরা সত্যিকারের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি।”
তিনি আরো বলেন, “অন্যান্য দেশ যখন আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছু বলে, তখন আমরা এটাকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করি না। আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার সুযোগ হিসেবে এ ধরনের আলোচনাকে স্বাগত জানাই এবং আমরা জানি না কেন অন্য কোনো দেশ আপত্তি করবে।”
উজরা জেয়া এবং ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন কি না জানতে চাইলে মিলার জানান, তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট, শ্রম ইস্যু, মানবাধিকার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানব পাচার মোকাবেলাসহ অভিন্ন মানবিক উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করতে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।