রাজধানী দিল্লিতে যমুনা নদীর জলস্তর বিগত ৪৫ বছরের রেকর্ড ভেঙে জলস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। যমুনা নদীর আশপাশের অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। পরিস্থিতির ক্রমশই অবনতি হচ্ছে, জল ঢুকতে শুরু করেছে শহরের ভেতরেও।
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাসভবন সংলগ্ন এলাকাও ভাসছে যমুনা নদীর জলে। এই জরুরি অবস্থায় হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে রাজধানী শহরে।
বুধবার রাত থেকে আরও বেড়েছে যমুনা নদীর জলস্তর। বৃহস্পতিবার ১৩ জুলাই সকাল ৭টায় জলস্তর পৌঁছে গিয়েছে ২০৮.৪৬ মিটার। সকাল ৮টা নাগাদ এই জলস্তর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৮.৪৮ মিটার। পার্শ্ববর্তী রাজ্য হরিয়ানার হাতনিকুণ্ড বাঁধ থেকে জল ছাড়ার জেরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। যমুনার জল বিপদসীমা অতিক্রম করলেই, নিচু এলাকায় মানুষজনকে অন্যত্র সরানোর কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ভারী বৃষ্টির জেরে যমুনা নদীর জল বিপদসীমা অতিক্রম করতেই শুরু হয়েছে নদী সংলগ্ন নিচু এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার কাজ।
গত তিনদিন ধরে দিল্লিতে রেকর্ড হারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করে যমুনা নদীর জলস্তর। হরিয়ানার বাঁধ থেকে বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ার কারণেই দিল্লিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি জানিয়েছেন, হরিয়ানার বাঁধ থেকে জল ছাড়া বন্ধ না হলে দিল্লিতে মহাপ্লাবন শুরু হবে।
মঙ্গলবার সকালে জলস্তর ২০৬.৩২ মিটারে পৌঁছতেই যমুনা নদী সংলগ্ন নিচু স্থানগুলিতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে হরিয়ানার হাতনিকুণ্ড বাঁধ থেকে জল ছাড়ার পর। প্রায় ১ লাখ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে এই বাঁধ থেকে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে বন্যা হয়েছিল দিল্লিতে। এরপর ২০১৩ সালে হরিয়ানা থেকে আট লাখ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু, তা সত্ত্বেও বন্যা হয়নি রাজধানীতে। কিন্তু এবারে নাগাড়ে বৃষ্টি হয়ে চলেছে দিল্লিতে। একদিকে জলমগ্ন দিল্লি, অন্যদিকে যমুনার জলস্তর বেড়ে যাচ্ছে বলেই রাজধানী দিল্লি প্লাবিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোট ১৬টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
বন্যা পরিস্থিতির জেরে দিল্লির রিং রোডের সিভিল লাইন, মঞ্জু কা টিলা, কাশ্মীরি গেট সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এই এলাকা মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাসভবন থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরত্ব। এই এলাকা কার্যত জলের নীচে ডুবে গিয়েছে। কাশ্মিরী গেট সংলগ্ন অঞ্চলেই রয়েছে দিল্লি বিধানসভা। বোট ক্লাব, মনেস্ট্রি মার্কেট, যমুনা বাজার, গীতা ঘাট, খাড্ডা কলোনি, মঞ্জু কা টিলা থেকে ওয়াজিরাবাদ, ময়ূর বিহার প্লাবিত।