ভারতে বিহারের রাজধানী পাটনার বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বৃহস্পতিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। স্টেশন থেকে শহরে ঢোকার মূল রাস্তায় ডাকবাংলো চকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সম্রাট চৌধুরীর নেতত্বে কয়েক হাজার দলীয় সমর্থক বসে পড়েন। পুলিশ লাঠি চালিয়ে, টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে, জল কামান ব্যবহার করেও ক্ষিপ্ত বিজেপি সমর্থকদের তুলতে পারেনি। শহরের একাধিক জায়গায় বিজেপি পার্টির লোকেরা রাস্তা অবরোধ করে বিস্তীর্ণ এলাকা অচল করে রাখেন।
বিহারের বিজেপি নেতা তথা সাংসদ সুশীল কুমার মোদী জানান, পুলিশের লাঠির আঘাতে গুরুতর জখন হয়ে মারা যান জাহানাবাদের নেতা বিজয়কুমার সিং। যদিও পাটনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নিহতের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে ময়না তদন্তে।
বিহার বিজেপি বৃহস্পতিবার পাটনায় বিধানসভা অভিযানের ডাক দেয়। মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে বর্ষাকালীন অধিবেশন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিহার সভা শুরুর পর বিরোধী দলনেতা বিজয় চৌধুরীর নেতৃত্বে বিধায়কেরা বিধানসভা থেকে বেরিয়ে গান্ধী ময়দানে যান। সেখান থেকে নেতা-কর্মী-বিধায়ক-সাংসদদের বিধানসভা অভিযান শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু এক কিলোমিটার এগোনোর আগেই পুলিশ লোহার ব্যরিকেড দিয়ে রাস্তা আটকে দেয়। শুরু হয় তুমুল সংঘর্ষ।
গত বছর অগস্টে নীতীশ কুমার বিজেপির সঙ্গে ছেড়ে আরজেডির হাত ধরে সরকার গড়ার পর উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবকে পাশে নিয়ে দশ লাখ চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। বিজেপির দাবি, একটি চাকরিও তারপর থেকে হয়নি। তার উপর রাজ্যে স্কুল শিক্ষকের চাকরিতে নিয়োগে ভিন রাজ্যের ছেলেমেয়েদের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। নীতীশ সরকারের বক্তব্য ভাল মানের শিক্ষক পেতেই এই সিদ্ধান্ত করা হয়েছে।
বিজেপি, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও পথে নেমেছে। তবে তাদের মূল দাবি হল সরকার হিসাব দিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া দশ লাখ চাকরি কে কোথায় পেয়েছেন।
এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবেব পদত্যাগের দাবি। বুধবার থেকে দিল্লির সিবিআই আদালতে তেজস্বীর বিরুদ্ধে মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। রেলে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম আছে তেজস্বীর। দিন কয়েকের মধ্যেই আদালতে তাঁর ডাক পড়বে। বুধবার বিহার বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কেরা তেজস্বীর পদত্যাগের দাবিতে অধিবেশন বয়কট করেন। বৃহস্পতিবার বিধানসভা অভিযানের তেজস্বীর পদত্যাগও বিজেপির এক দফা দাবি ছিল।
এদিন দুপুরে পাটনার ডাকবাংলো মোড়ে তুমুল ধ্বস্তাধ্বস্তি হয় পুলিশ ও বিজেপির সমর্থকদের মধ্যে। মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সম্রাট চৌধুরী এবং বিরোধী দলনেতা বিজয় চৌধুরী। রাজ্য পার্টির দুই শীর্ষ নেতা ডাকবাংলো মোড়ে বসে পড়ায় যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। পুলিশের পদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। বিজেপির দাবি জলকামানে এবং লাঠির আঘাতে বহু কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন।