বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বিভিন্ন দেশে বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) নেতাদের পাচার করা অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “বিএনপির অনেক নেতার টাকা (বিদেশি ব্যাংকে) জমে আছে। আমরা ধীরে ধীরে এগুলো ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি”।
বুধবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পরিবারের দুর্নীতির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, সড়ক খাতে দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক বিএনপির শাসনামলে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। খালেদা জিয়ার দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার আগেই বিদেশিরা এবং একজন এফবিআই এজেন্ট তারেকের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলায় সাক্ষ্য দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো) বিদেশে পাচার করা অর্থ থেকে সরকার ৪০ কোটি টাকা ফেরত নিতে পেরেছে। কিন্তু সমস্যা হলো তারা টাকা যে দেশে জমা করেছে, সেখান থেকে টাকা ফেরত আনা একটি কঠিন বিষয়। দেশগুলো টাকা ছাড়তে চায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে প্রতিটি খাতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা অন্তত দাবি করতে পারি গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ অনেক বদলে গেছে। আপনি অবশ্যই এটি উপলব্ধি করতে পারেন”।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার সফলভাবে দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১ শতাংশ থেকে এখন ১৮ দশমিক ৬ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ফসল, মাছ, মাংস ও শাকসবজিসহ খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশে ধান ও অন্য ফসলের কোনো অভাব নেই। পাশাপাশি ৬ লাখ ভূমিহীন পরিবারকে বিনামূল্যে আধা-পাকা ঘর করে দিয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে। আমরা সাড়ে ১৪ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করেছি।
সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে বেকারত্বের হার মাত্র ৩ শতাংশে নেমে এসেছে। বেকারত্বের হার আরও কমিয়ে আনতে তরুণদের বিভিন্ন উদ্দীপনা প্যাকেজ ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরির পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে সরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শুধু বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নই নয়, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্যও ব্যাপক কাজ করেছি এবং বাস্তবায়ন করেছি। বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত।