অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মণিপুরে কুকি নারীদের অবমাননার প্রতিবাদে অভিযুক্ত মেইতেই তরুণের বাড়িতে আগুন দিলেন মেইতেই মহিলারাই


মণিপুরে কুকি নারীদের অবমাননার প্রতিবাদে অভিযুক্ত মেইতেই তরুণের বাড়িতে আগুন দিলেন মেইতেই মহিলারাই
মণিপুরে কুকি নারীদের অবমাননার প্রতিবাদে অভিযুক্ত মেইতেই তরুণের বাড়িতে আগুন দিলেন মেইতেই মহিলারাই

মণিপুরে তিন মহিলাকে বিবস্ত্র করে প্রকাশ্যে হাঁটানো ও গণধর্ষণ করার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই ঘটনায় এবার মূল অভিযুক্ত হুইরেম হেরোডাস মেইতেইয়ের বাড়ি জ্বালিয়ে দিল ক্ষুব্ধ জনতা।

পুলিশ জানিয়েছে, হেরোডাসের গ্রেফতারের খবর পেয়ে আশপাশের গ্রামের মহিলারা একত্রিত হয়ে অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর করার পর আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রসঙ্গত, মণিপুরে বরাবরের মতো এবারও কুকি এবং মেইতেই, দুই জনজাতি গোষ্ঠীর শিবিরেই আন্দোলনের পুরোভাগে আছেন মহিলারা। অভিযুক্ত হেরোডাস, মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষ। তার বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছেন ওই সম্প্রদায়ের মহিলারাই।

মেইতেই সম্প্রদায়ের ওই আন্দোলনকারী নারীদের একজন মেইরা পাইবি বলেন, "যে সম্প্রদায়েরই হোক না কেন, একজন নারীর মর্যাদা ক্ষুন্ন করা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা আমাদের সমাজে এমন লোক থাকতে দিতে পারি না। এটা পুরো মেইতেই সম্প্রদায়ের জন্য লজ্জাজনক ঘটনা।" ওই মহিলারা মীরা পাইবিস বা ‘মহিলা মশাল বহনকারী’ নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর-এ বলা হয়েছে, ৪ মে এক কুকি পরিবারের ৫ সদস্য হিংসার আবহে জঙ্গলে লুকিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করলেও পুলিশের কাছ থেকে তাঁদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তারপর দুই মহিলাকে নগ্ন করিয়ে হাঁটানো হয়। তাঁদের গণধর্ষণও করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের মধ্যে একজনের ৫৬ বছর বয়সি বাবা এবং ১৯ বছর বয়সি ভাইকে খুন করা হয় তাঁর চোখের সামনেই। আরও একজনকে যৌন নিগ্রহ করা হয়। পরে তিন মহিলা কোনওরকমে পালিয়ে যান।

এদিকে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে অবিলম্বে সংসদে আলোচনার দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। শুক্রবার ২১ জুলাই এই দাবি জানিয়ে দুই কংগ্রেস সাংসদ মণিকাম টেগর এবং গিবি ইডেনের আনা মুলতুবি প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় বিরোধীরা বিক্ষোভ শুরু করে। গোলমালের মুখে স্পিকার ওম বিড়লা বেলা ১২’টা পর্যন্ত অধিবেশন স্থগিত করে দেন।

অন্যদিকে, রাজ্যসভাতেও অচলাবস্থা তৈরি হয় মণিপুর নিয়ে। বিরোধীরা ওই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রথমে আলোচনা দাবি করে। সভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় অধিবেশন বেলা দু’টো পর্যন্ত স্থগিত করে দেন।

একাধিক সাংসদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সমালোচনায় মুখর হন। কিন্তু সরকার শুক্রবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে বিরোধীদের সমালোচনা-প্রতিবাদ সামলানোর জন্য বেছে নেয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী কথা দেন সরকার যথাসময়ে মণিপুর নিয়ে দুই কক্ষেই আলোচনা করবে।

তিনি বলেন, "মণিপুরের ঘটনা খুবই গুরুতর এবং পরিস্থিতি বুঝতে পেরে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন যে মণিপুরে যা ঘটেছে তা সমগ্র জাতিকে লজ্জায় ফেলেছে৷ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এই ঘটনার জন্য কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা মণিপুর নিয়ে সংসদে আলোচনা চাই।"

রাজনাথ আরও বলেন, "আমি সর্বদলীয় বৈঠকে বলেছিলাম, সংসদে আবারও বলছি যে আমরা মণিপুর নিয়ে সংসদে আলোচনা চাই। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল আছে যারা অকারণে এখানে এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় যাতে মণিপুর নিয়ে আলোচনা না হতে পারে। আমি স্পষ্টভাবে অভিযোগ তুলেছি যে বিরোধী দল মণিপুর নিয়ে আদৌ সিরিয়াস নয়।"

XS
SM
MD
LG