অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জুতা আবিষ্কার: দুই ভারতীয় তরুণ পুরনো জুতো রিসাইকেল তৈরি করছেন প্রান্তিক শিশুদের নতুন জুতো


রমেশ ধামি - পরিচালক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা গ্রিনসোল (বামে); শ্রীয়ান্স ভান্ডারী-সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা গ্রিনসোল এবং পরিচালক হেরিটেজ গার্লস স্কুল।
রমেশ ধামি - পরিচালক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা গ্রিনসোল (বামে); শ্রীয়ান্স ভান্ডারী-সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা গ্রিনসোল এবং পরিচালক হেরিটেজ গার্লস স্কুল।

পেশাদার অ্যাথলিট হিসেবে ভাল জুতো দরকার ছিল। তবে জুতোগুলি খুব বেশিদিন পরাও যেত না, একটু পুরনো হলেই খেলার জন্য নতুন জুতো কিনতে হতো। অথচ পুরনো জুতোটি কিন্তু খেলার উপযুক্ত না থাকলেও, না-পরার মতো পরিস্থিতি হয়নি তখনও। ফলে বেশ কিছু জুতো এভাবেই জমে যেত। অ্যাথলিট রমেশ ধামি একদিন এমনই কিছু পুরনো জুতো থেকে চপ্পল বানিয়েছিলেন। দেখে নিজেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন, পুরনো, অকেজো জুতো কাজে লেগে যাওয়ায়।

এর পরেই আর এক সহ-অ্যাথলিট শ্রেয়াংশ ভাণ্ডারীর সঙ্গে এই কাজটি পেশাদারভাবে করতে শুরু করেন রমেশ। তাঁরা ঠিক করেন, রমেশের পুরনো জুতোগুলির মতোই তাঁদের সমস্ত পুরনো জুতো দিয়েই নতুন করে চটি-জুতো বানানো যেতে পারে। এভাবেই ২০১৩ সালে তৈরি হয়েছিল ‘গ্রিনসোল’ সংস্থা। পুরনো জুতোদের রিসাইকেল করার কাজ শুরু করেছিল 'গ্রিনসোল'।

শ্রেয়াংস বলেন, "প্রাথমিকভাবে আমরা ভেবেছিলাম, যে আমরা কেবল আমাদের জুতোগুলিই পুনর্ব্যবহার যোগ্য করব এবং ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্যই এরকম জুতো তৈরি করব। কিন্তু ধীরে ধীরে আমাদের কাজটি আরও বাড়তে থাকে, এই আইডিয়া অনেকের পছন্দ হয়। এটা একটা সামাজিক উদ্যোগে পরিণত হয়। আমরা তখন প্রান্তিক ছেলেমেয়েদের এরকম জুতো দিয়ে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিই।"

জানা গেছে, এখন দেশজুড়ে শ্রেয়াংশ-রমেশের জুতো সংগ্রহ অভিযান চলছে। বিভিন্ন অ্যাথলিট এবং অন্যান্যদের কাছ থেকে তাঁরা পুরনো কিন্তু ভাল অবস্থায় থাকা জুতো সংগ্রহ করেন এবং রিসাইকেল করে বিভিন্ন গ্রামের শিশুদের দেন। শ্রেয়াংসের কথায়, "আমরা যেখানে জুতো দিতে যাই সেখানে জুতো পরার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচারও চালাই। শিশুরা যাতে খালি পায়ে স্কুলে না যায়, সে কথা বুঝিয়ে বলি। তারপরে আমাদের দেওয়া সেই নতুন নতুন চপ্পল পরে ওদের দৌড়তে এবং খেলতে দেখে দারুণ লাগে।"
তবে এই কাজে সময় এবং অর্থ দুই-ই লাগে। কারণ ফেলে দেওয়া জুতোগুলি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়, যেখানে সেগুলি ভাল করে ধোয়া হয়, তার পরে বিভিন্ন অংশ কেটে আলাদা করে প্রয়োজনীয় ভাবে কাটা হয়। তার পরে ফের সেলাই করা হয়। শ্রেয়াংস জানান, "অনেক জুতো নির্মাতা পুরনো জুতো রিসাইকেল করলেও তারা সেগুলি গলিয়ে ফেলে। কিন্তু এক্ষেত্রে তা করা হয় না। কেটে, সেলাই করে সেগুলিকে সংস্কার করা হয়, যাতে ন্যূনতম কার্বন নির্গমন হয়।"
শ্রেয়াংস-রমেশ জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত তাঁরা ৫ লক্ষ ৮০ হাজার পুরনো জুতো রিসাইকেল করেছেন ও বিলি করেছেন। এই কাজে ৬৫টিরও বেশি কর্পোরেট সংস্থা এগিয়ে এসে আর্থিক দায়িত্ব নিয়েছে।
XS
SM
MD
LG