অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠনের শান্তি সমাবেশ শুক্রবার করার ঘোষণা


ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের শান্তি সমাবেশ শুক্রবার
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের শান্তি সমাবেশ শুক্রবার

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ তাদের পূর্বঘোষিত শান্তি সমাবেশ একদিন পিছিয়ে শুক্রবার করার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের শান্তি সমাবেশ এখন বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে শুক্রবার (২৮ জুলাই) শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জানান, আগারগাঁওয়ের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠটি সমাবেশের উপযোগী না হওয়ায় সমাবেশ এক দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন খান নিখিল সাংবাদিকদের জানান, বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের মঞ্চ নির্মাণের কাজ স্থগিত করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তারা বিভিন্ন মাঠ পরিদর্শনও করেছেন। মাঠ পরিদর্শনের পর তারা রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

দেশের বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে এই শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো।

এর আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী সংগঠন—যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগকে তাদের নির্ধারিত সমাবেশ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে না করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা মহানগর নাট্যমঞ্চে করার পরামর্শ দিয়েছিল।

একদিন পিছিয়ে শুক্রবার নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি

এদিকে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তাদের বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি পিছিয়ে শুক্রবার (২৮ জুলাই) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুলিশের প্রস্তাব মতে বিএনপি রাজধানী ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে দলীয় মহাসমাবেশ করতে রাজি হয়নি।

বুধবার (২৬ জুলাই) রাতে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠক শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণা দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শুক্রবার দুপুর ২টায় দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

একদিন পিছিয়ে শুক্রবার নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি
একদিন পিছিয়ে শুক্রবার নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে নিতে বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশের ঘোষণা দিচ্ছি।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সরকার বা তার কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের চলমান শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি অংশ এই মহাসমাবেশ আয়োজনে কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না।

এর আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক জানিয়েছিলেন, পুলিশ বিএনপিকে নয়াপল্টন বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার কর্মদিবস হওয়ায় আমরা তাদের গোলাপবাগ মাঠ বা অন্য কোনো মাঠে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি”।

ডিএমপির সিদ্ধান্তের পর বিকেল ৪টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমাবেশস্থলের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বৈঠকে বসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

বৈঠক শেষে সমাবেশস্থল নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে জানানোর কথা ছিল মির্জা ফখরুলের। কিন্তু তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে গুলশানের উদ্দেশে নয়াপল্টন ত্যাগ করেন। সেখানে তারা আবার বৈঠকে বসেন।

বৈঠক শেষে রাত ৯টা ৫ মিনিটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

সোমবার ঢাকার নয়াপল্টন বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার আগ্রহ জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) চিঠি দিয়েছিল বিএনপি।

উল্লেখ্য, শনিবার (২২ জুলাই) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ প্রশস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে তাদের এক দফা দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তাদের যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় রাজধানীতে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে ১২ জুলাই মির্জা ফখরুল আনুষ্ঠানিকভাবে ‘একদফা’ আন্দোলনের ঘোষণা দেন। এক দফা দাবি আদায়ের প্রথম কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপিসহ অন্য বিরোধী দল ও জোটগুলো ১৮ ও ১৯ জুলাই দেশব্যাপী দুই দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে।

বিরোধী দলের এক দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ; বিদ্যমান সংসদ ভেঙে দেওয়া; নির্বাচনকালে নিরপেক্ষ সরকার গঠন; একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন; বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজনৈতিক রাজবন্দীর মুক্তি, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার ও সাজা বাতিল।

XS
SM
MD
LG