ভারতের উত্তর প্রদেশে বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদে জরিপ চলবে কিনা সেই ব্যাপারে বৃহস্পতিবার ২৭ জুলাই এলাহাবাদ হাইকোর্টের শুনানি শেষ হয়েছে। ৩ অগাস্ট মামলার রায় বের হবে। ততদিন পর্যন্ত মসজিদে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের জরিপ বন্ধ থাকবে।
বুধবার ২৬ ও বৃহস্পতিবার ২৭ জুলাই এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রীতিনর দিবাকরের বেঞ্চে দীর্ঘ শুনানি চলে।
এই মামলায় দু'দিনের শুনানিতে তীব্র বাদানুবাদ চলে হিন্দু এবং মুসলিম পক্ষের মধ্যে। মুসলিম পক্ষ বুধবার দাবি করে জরিপের নির্দেশ বাতিল করতে হবে। তাঁদের আশঙ্কা জরিপের সময় মসজিদের নির্মাণ ভাঙা হতে পারে। জবাবে প্রধান বিচারপতি মুসলিম পক্ষ এবং মসজিদ কর্তৃপক্ষকে বলেন, "সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে নির্মাণ অক্ষত রাখতে হবে। আদালতের নির্দেশের উপর ভরসা রাখুন।" জবাবে মুসলিম পক্ষ বলেছিল, "আমরা শঙ্কিত। ভরসা রাখতে পারছি না।"
অন্যদিকে হিন্দু পক্ষের দাবি ছিল, ১৯৫৮ সালে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির তৈরি হয়েছিল। ১৬৬৯ সালে ঔরঙ্গজেবের সময় মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করা হয়। অযোধ্যায় যেভাবে বাবরি মসজিদের পিলারের নিচে হিন্দু মন্দিরের অংশ সন্ধান করা হয়েছিল জ্ঞানবাপীর ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। গোটা বিশ্বেই এই ভাবে প্রাচীন নির্মাণের জরিপ, সমীক্ষা করা হয়।
বুধবার দু'পক্ষের সওয়াল-জবাবের সময়ে, প্রধান বিচারপতি শুনানিতে ভিন্ন একটি প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তিনি প্রশ্ন করেন, "মসজিদ চত্বরে শৃঙ্গার গৌরী দেবীর পুজাপাঠের অনুমতি চেয়ে পাঁচ মহিলা আবেদন করেছিলেন। সেখান থেকে জরিপের বিষয়টি কীভাবে এল?"
প্রধান বিচারপতি বুধবারই বলেছিলেন, বিবাদের সবটা আদালতের কাছে স্পষ্ট হয়নি। তাই শুনানি বৃহস্পতিবারও চলবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের প্লেসেস অফ ওরশিপ (স্পেশ্যাল প্রভিশন) আইন অনুযায়ী ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট যে উপাসনাস্থল যেমন ছিল তেমনই রাখতে হবে। সেগুলির চরিত্র ও ব্যবহার বদলানো যাবে না। একমাত্র অযোধ্যার বাবরি মসজিদকে এই আইনের পরিধির বাইরে রাখা হয়েছিল প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো মামলা থাকায়।
কিন্তু জ্ঞানবাপী সহ অন্য সব উপাসনা স্থল প্লেসেস অফ ওরশিপ আইনের আসনের অধীনে পড়ে। অর্থাৎ সেগুলির কোনও পরিবর্তন করা যাবে না। তা সত্ত্বেও মুসলিম পক্ষ চিন্তিত মসজিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে।