ভারতে এলপিজি সিলিন্ডারের ভর্তুকি সরাসরি গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হচ্ছে, সোমবার ৩১ জুলাই এ কথা নিশ্চিত করল কেন্দ্রীয় সরকার। এলপিজির লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি থেকে গ্রাহকদের রক্ষা করার জন্য সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সংসদে সেই প্রশ্নের জবাবে একথা জানিয়েছে কেন্দ্র।
"ভারত রান্নার এলপিজি খরচের ৬০ শতাংশেরও বেশি আমদানি করে বাইরে থেকে। দেশে এলপিজির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে এর দামের সঙ্গে যুক্ত। রান্নার গ্যাসের ক্ষেত্রে ভারত উপভোক্তাদের জন্য গ্যাসের কার্যকর দাম প্রয়োজনমতো পরিবর্তন করতে থাকে। তার ভর্তুকি সরাসরি যোগ্য সুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। তার সঙ্গেই, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবষর্ষের জন্য বছরে ১২টি পর্যন্ত সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধাভোগীদের জন্য ১৪.২ কেজির সিলিন্ডার পিছু ২০০ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার," সোমবার রাজ্যসভায় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি একথা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত দু’ বছরে গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে যে তাঁরা ডিবিটি বা সরাসরি সুবিধা স্থানান্তর প্রকল্পের অংশ হিসাবে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ভর্তুকির টাকা পাচ্ছেন না। সেসব প্রশ্নের জবাবেই সোমবার কেন্দ্রের তরফে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।
গত বছরের মে মাসে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১১৮ ডলারে পৌঁছানোর পর ফের উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেলেও এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কেন কমানো হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন বারবার করা হয়েছিল হরদীপ সিং পুরিকে। গত সাত মাস ধরে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ৬০ ডলার থেকে ৮০ ডলারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও চেন্নাইতে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম গত এক বছর ধরে হয় অপরিবর্তিত, কিংবা বেড়েই চলেছে। উদাহরণস্বরূপ, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একটি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ছিল ১০৬৮.৫০ টাকা, তারপর তা বেড়ে হয় ১১১৮.৫০ টাকা। তখন থেকে এখনও পর্যন্ত এই একই দাম রয়েছে।
দিল্লিতে ২০২০ সালের মে মাসে ১৪.২ কেজির রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ছিল ৫৮১ টাকা। তারপর থেকে এই বছরের মার্চের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে বেড়ে তা ১১০৩ টাকায় পৌঁছেছে। অপরিশোধিত তেলের দামে বিপুল পতনের পরও এলপিজি-র দাম কমানো হয়নি।
পুরি জনিয়েছেন, তেল বিপণন সংস্থাগুলি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছিল কারণ সৌদি আরবে প্রোপেনের দাম, যা কিনা আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির বেঞ্চমার্ক মূল্য, তা ২০২১ অর্থবর্ষে ৪১৫ ডলার থেকে ২০২৩ অর্থবর্ষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১২ ডলারে।
যদিও তারপর থেকে আন্তর্জাতিক দামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারতে রান্নার গ্যাসের দাম আর কমেনি।