অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মণিপুর জাতিদাঙ্গা: শীর্ষ আদালতের কঠোর সমালোচনা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির


ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মণিপুর জাতিদাঙ্গা: শীর্ষ আদালতের কঠোর সমালোচনা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির
ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মণিপুর জাতিদাঙ্গা: শীর্ষ আদালতের কঠোর সমালোচনা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির

উত্তর-পূর্ব ভারতের জনজাতি দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মণিপুর নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে চলছে একাধিক মামলা। সে রাজ্যের বিজেপি সরকারের সমালোচনায় কঠোর হচ্ছে দেশের শীর্ষ আদালত। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সুপ্রিম কোর্টে মামলা রুজু হওয়ার পর থেকেই পার্বত্য রাজ্যটির অবস্থা নিয়ে সরব।

মঙ্গলবার ১ অগাস্ট তিনি মন্তব্য করেছেন, "মণিপুরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে।" রাজ্য পুলিশের প্রতি তীব্র অনাস্থা প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, "পুলিশের বিরুদ্ধে যে ধরনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে তাতে তাদের উপর ঘটনার তদন্তভার দেওয়া যায় না।" তিনি অসহায়তা প্রকাশ করে বলেন, "মানুষকে এই অবস্থায় নিরাপত্তা দেবে কে?" প্রসঙ্গত, অভিযোগ উঠেছে যে আদিবাসী মহিলাদের বিবস্ত্র করে ঘোরানো হয়েছিল তাঁদের উন্মত্ত জনতার হাতে তুলে দিয়েছিল পুলিশই।

এদিকে, মঙ্গলবারই মণিপুর নিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখেছেন দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল। গত সপ্তাহে মণিপুর ঘুরে এসে রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো রিপোর্টে তিনি রাজ্যে অবিলম্বে এন বীরেন সিংয়ের সরকারকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছেন। রাজ্য পুলিশকে বাদ দিতে তদন্তের সুপারিশ তিনিও করেছেন।

রাজনৈতিক মহল বলছে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে বলার পর কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের বীরেন সরকারের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করে কিনা সেটাই এখন দেখার। তবে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণে বিরোধীদের বক্তব্যই প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। ৮ তারিখ সংসদে মণিপুর নিয়ে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের উপর বিতর্ক শুরু হওয়ার কথা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এরফলে বিরোধীদের অবস্থান শক্ত হচ্ছে সন্দেহ নেই।

এর আগে প্রধান বিচারপতি সরকারের যুক্তি উড়িয়ে স্পষ্ট করে দেন মণিপুরে নারী নির্যাতনের ঘটনাকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্য রাজ্যের ঘটনার সঙ্গে এক করে দেখা যায় না। তাঁর বক্তব্য, উত্তর পূর্বের ওই রাজ্যটিতে নারীর উপর যৌন নির্যাতন ভয়ঙ্কর ঘটনা।

ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, শীর্ষ আদালত মণিপুর নিয়ে নিজেরাই তদন্ত কমিটি গড়ে দেবে। সেই কারণেই মঙ্গলবার সকালেই মণিপুরে সেই দুই মহিলার বয়ান নথিভুক্ত করা থেকে সিবিআইকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। মঙ্গলবার দুই মহিলার কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। কিন্তু শীর্ষ কোর্ট বলে আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বয়ান সংগ্রহ করা যাবে না।

দুই মহিলাকে নগ্ন করে ঘোরানোর ঘটনায় আগেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্থানীয় নাগরিক সংগঠনগুলির বাধায় সিবিআই আক্রান্ত মহিলাদের বয়ান নথিভুক্ত করতে পারেনি এতদিন। মঙ্গলবার বিনা বাধায় আধিকারিকেরা পৌঁছে গিয়েছিলেন।

সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে আপাতত তদন্ত বন্ধ রাখতে বলার কারণ হিসাবে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান প্রধান বিচারপতি মণিপুরের যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলির তদন্তে একটি যৌথ তদন্ত কমিটি গড়ে দিতে পারেন।

দুই আক্রান্ত মহিলার তরফেও আদালতে বলা হয়, তাঁরা সিবিআই তদন্ত চান না। অন্যদিকে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের বাইরে মামলা সরানোর প্রস্তাবেরও বিরোধিতা করেছেন নির্যাতিতা দুই মহিলার আইনজীবী কপিল সিব্বল।

XS
SM
MD
LG