অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে যে, সুদানের যুদ্ধরত সামরিক দলগুলো যুদ্ধাপরাধ করছে কারণ এই দেশ তিন মাসের বেশি ধরে চলা সহিংসতায় বিধ্বস্ত। বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত হামলা, যৌন সহিংসতা ও যুদ্ধাপরাধের সমতুল্য পদক্ষেপ নথিভুক্ত করেছে এই সংস্থা। অ্যামনেস্টি বলেছে, দারফুর অঞ্চলে কিছু সম্প্রদায়কে তাদের জাতিগোষ্ঠীগত পরিচয়ের কারণে নিশানা করা হয়েছে, যার ফলে কয়েক হাজার মানুষ প্রতিবেশী চাদে পালিয়েছে।
পূর্ব আফ্রিকা, হর্ন ও গ্রেট লেক বিষয়ক অ্যামনেস্টির আঞ্চলিক উপ-অধিকর্তা সারাহ জ্যাকসন এক নতুন রিপোর্ট থেকে বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, "আজকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ‘আমাদের দুয়ারে মৃত্যু’ নামে যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করছে, সেটি সুদানের বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুদ্ধাপরাধ এবং বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগের দিকে নজর দিয়েছে। এটি বেসামরিক নাগরিকদের পাশাপাশি ক্রসফায়ারে ধরা পড়া বেসামরিক নাগরিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে নিশানা করার দিকটিও দেখছে।এই প্রতিবেদনে যৌন সহিংসতার ঘটনাও নথিভুক্ত করেছে। এটি দেখায় যে বর্তমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে র্যাপিড সাপোর্ট বাহিনী এবং সুদানী সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা সংঘটিত যুদ্ধাপরাধগুলি কতটা গুরুতর যেখানে আমরা দেখতে পারি অব্যক্ত মৃত্যু ও ধ্বংস।"
সুদানের সার্বভৌম কাউন্সিলের নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও হেমেদতি নামে পরিচিত জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বাধীন আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতার লড়াই চলছে বলে মনে হয়। সুদানের নিরাপত্তা বাহিনীর উপদলগুলো এপ্রিল মাসে একে অপরের বিরুদ্ধে তাদের বন্দুক তাক করেছিল।
এই সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং ৪০ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তারা এখন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বসবাস করছেন।
মানবাধিকার গোষ্ঠীর তদন্তকারীরা বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলা, মানবিক অবকাঠামো এবং নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার নথিভুক্ত করার জন্য দেশের ভিতরে ও বাইরে অন্তত ১৮০ জন সুদানীর সাথে কথা বলেছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সোমালিয়া ও সুদান বিষয়ক গবেষক আবদুল্লাহি হাসান বলেছেন, এই দেশে সংঘটিত নির্যাতনের তথ্য-বিবরণকে সমর্থন করার করার প্রমাণ রয়েছে এই সংস্থার কাছে।
তিনি বলেন, "প্রতিবেদনটি ডিজিটাল প্রমাণসহ অন্যান্য প্রমাণ দ্বারাও অনুমোদিত। ছবি, ভিডিও, উপগ্রহ চিত্র ও ফরেনসিক রিপোর্টসহ আমাদের প্রমাণ সংক্রান্ত ল্যাব টিম দ্বারা এটি যাচাই করা হয়েছে। সুদানে খার্তুম, দারফুর এবং বিশেষ করে পশ্চিম দারফুরে উভয়ই সম্প্রদায় সত্যিই বিধ্বংসের শিকার। পশ্চিম দারফুরে জাতিগোষ্ঠীগত মাসালিত জনগণকে নিশানা করা এবং আরএসএফ ও আরব জঙ্গিদের চালানো জাতিগোষ্ঠীগতভাবে উদ্দেশ্যমূলক আক্রমণ নথিভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি আমরা।"