বাংলাদেশ সরকার এক মাসের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন জ্বালানিসচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার।
বুধবার (৯ আগস্ট) ‘জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস’ উপলক্ষে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে এ কথা বলেন তিনি।
খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, “গত সপ্তাহে অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি নতুন মডেল প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট (পিএসসি) অনুমোদন করেছে। এখন আমরা এক মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি”।
খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, সরকার অনুমান করছে, এবার আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানির (আইওসি) কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে। কারণ মডেল পিএসসিকে আরও আকর্ষণীয় করে সংশোধন করা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে এই বিষয়ে কিছু ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েছি।
খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে এবং এর অংশ হিসেবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহের জন্য এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।
ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরী, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, মোল্লা আমজাদ ও বিদ্যুৎসচিব হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরী বলেন, “গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়টি বাস্তবভিত্তিক হতে হবে। ড্রিলিংয়ের মাধ্যমে গ্যাস না পাওয়া পর্যন্ত যেকোনো জায়গায় গ্যাসের রিজার্ভ নির্ধারণ করা অবাস্তব। বিভিন্ন স্থানে নতুন ১০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) থাকার সম্ভাবনা শুধুমাত্র তত্ত্বীয় হতে পারে”।
বাংলাদেশে নতুন গ্যাসের সম্ভাবনা সম্পর্কে অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের পরিসংখ্যানের সমালোচনা করে তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরী বলেন, “যতক্ষণ না আমরা খনন করে এটি খুঁজে পাচ্ছি, ততক্ষণ আমাদের ১০ টিসিএফ গ্যাসের সম্ভাবনা থাকার কথা বলা উচিত নয়”।
আনোয়ার হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকার যদি ১৮টি নতুন কূপ খনন করে তাহলে সহজেই ৯ থেকে ১০ টিসিএফ গ্যাস পাওয়া যাবে। কারণ দেশের খনন কাজের সাফল্যের অনুপাত ১:৩।
মোল্লা আমজাদ বলেন, কূপ খনন করা খুবই ব্যয়বহুল একটি বিষয়। তাই বিদেশি কোম্পানিগুলোকে এ ব্যাপারে নিয়োজিত করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, সরকার ডলার সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে এবং এখন সরকার আইওসি, বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী এবং এলএনজি সরবরাহকারীদের অর্থ প্রদান করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
মোল্লা আমজাদ বলেন, সরকার অনেক ভালো নীতিমালা করেছে। কিন্তু এগুলোর বাস্তবায়নে নানা সমস্যা এখন বর্তমান জ্বালানি সংকট তৈরি করেছে।
হাবিবুর রহমান বলেন, সরকার আগামী ২ থেকে ৩ বছরে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে।