অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আল–কায়েদার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সুফিউল ঢাকায় ফিরে বললেন—“আমি ভেবেছিলাম, সবাই আমাকে ভুলে গেছে”


সুফিউল আনামকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সুফিউল আনামকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

জাতিসংঘের বাংলাদেশি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনামকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইয়েমেনে আল-কায়েদা জঙ্গিগোষ্ঠী অপহরণ করেছিল। বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার সহায়তায় উদ্ধার হওয়ার পর বুধবার (৯ অগাস্ট) ঢাকায় ফিরে এসেছেন তিনি।

বুধবার সুফিউল আনামকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

সুফিউল আনাম ঢাকায় পৌঁছার পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে তাঁর বন্দিত্বের হতাশাজনক বর্ণনা দেন। তাঁকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

সুফিউল আনাম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে এনএসআই কর্মকর্তারা আমাকে উদ্ধার করে”। এ জন্য এনএসআইয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

সুফিউল আনাম বলেন, “আমি ভেবেছিলাম সবাই আমাকে ভুলে গেছে। কিন্তু যখন এনএসআই সদস্যদের সঙ্গে দেখা হয়, তখন আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে আমাকে ভুলে যাওয়া হয়নি”।

ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীদের অপহরণ করার পর জীবিত বাড়ি ফিরতে পারব তা ভাবিনি। গত ১৮ মাস ধরে আমি খুব বিপজ্জনক পরিবেশে ছিলাম। আমি ভেবেছিলাম যেকোনো মুহূর্তে সন্ত্রাসীরা আমাকে মেরে ফেলবে”।

সংবাদ সম্মেলনে সুফিউল তাঁকে উদ্ধারকারী এনএসআই কর্মকর্তাদের পেশাদারত্বের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, “আমি তাদের পেশাদারত্ব এবং তাদের দায়িত্ববোধ ভুলে যাব না”।

কীভাবে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সুফিউল আনাম বলেন, “১৮ মাস আগে যখন আমি পেশাগত দায়িত্ব থেকে ফিরে আসছিলাম তখন আমাকে অপহরণ করা হয়... বন্দিদশায় প্রতি দিনই মৃত্যুর ভয় দেখা দেয়। যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। … সন্ত্রাসীরা আমাদের পাহাড় ও মরুভূমিতে আটকে রেখেছিল। আমার চোখ সব সময় চোখ বেঁধে রেখেছিল সন্ত্রাসীরা। আমাদের বন্দিত্বের অবস্থান তারা ১৮ বার পরিবর্তন করেছে। সৌভাগ্যক্রমে, তারা আমাকে নির্যাতন করেনি”।

সুফিউল ইয়েমেনের রাজধানী এডেনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা বিভাগের ফিল্ড সিকিউরিটি কো-অর্ডিনেশন অফিসার (প্রধান) হিসেবে কর্মরত থাকাকালে তিনিসহ তাঁর চার ইয়েমেনি সহকর্মীকে আল-কায়েদার সদস্যরা ইয়েমেনের মুদিয়াহ প্রদেশ থেকে অপহরণ করেছিল। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পরে তাঁর মুক্তির জন্য ৩০ লাখ ডলার মুক্তিপণ চেয়েছিল।

দেড় বছর বন্দি থাকার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সুফিউল আনামকে উদ্ধার করে।

XS
SM
MD
LG