বৃহস্পতিবার ১০ অগাস্ট ভারতের সংসদে বিরোধীদের অনাস্থা বিতর্কে জবাবি বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার বক্তৃতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য তুলে ধরা হল -
• ভগবান বড় দয়ালু। ভগবান তাঁর ইচ্ছার প্রকাশ কারও না কারও মাধ্যমে ঘটায়। ভগবানই বিরোধীদের বুঝিয়েছেন, যাতে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়।
• ২০১৮ সালেও অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল। তার পর ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপি বিপুল আসন পেয়েছে। আসন বেড়েছে। এনডিএ-র আসনও বেড়েছে। অনাস্থা প্রস্তাব আমাদের জন্য শুভ।
• বিরোধীদের আচরণই বুঝিয়ে দিয়েছে, দেশের চেয়ে ওদের কাছে দল বড়। দেশের খিদে ওদের কাছে বড় নয়, ওদের রাজনীতির খিদে এতটাই।
• এই বিতর্কের মজা দেখুন। ফিল্ডিং বিরোধীরা সাজিয়েছে, অথচ চার-ছয় এদিক থেকেই মারছে। ওরা খালি নো বল, নো বল করছে, এদিকে সেঞ্চুরি হয়ে যাচ্ছে।
• (বিরোধীদের উদ্দেশে) আপনারা তৈরি হয়ে আসেন না কেন? পাঁচ বছর সময় দিয়েছিলাম তো।
• যাদের বই খাতার ঠিক নেই, তারা কিনা আমাদের থেকে হিসাব চাইছে।
• অধীরবাবুর (অধীর রঞ্জন চৌধুরী) কী হাল হয়েছে, ওর দল ওকেই বলতে দেয়নি। যাই হোক, গুড়কে কি করে গোবর করতে হয় তা উনি ভালই জানেন!
• কিন্তু কেন অধীর চৌধুরীকে কোণঠাসা করা হচ্ছে! কে জানে কলকাতা থেকে হয়তো ফোন এসেছিল।
• এর আগে ফ্লোর লিডারের পদ থেকে অধীরবাবুকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ওর প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে।
• ভারতের যুব সম্প্রদায়কে আমরা দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন দিয়েছি, পেশাদারদের খোলা আকাশ দিয়েছি। ভারতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছি।
• অবিশ্বাস আর অহঙ্কার এদের (বিরোধীদের) মনে গেঁথে রয়েছে। পুরনো দিনের লোকেরা বলেন, কোনও কিছু ভাল হলে কালো টিকা লাগানো দরকার। আমিও আপনাদের বলছি (সতীর্থ), কালো পোশাক পরে আসুন।
• ডিকশনারি দেখে সব অপশব্দ ওরা খুঁজে বের করেছে। ওদের সবচেয়ে পছন্দের স্লোগান হল মোদী তেরি কবর খুদেগি। এটা ওদের পছন্দের স্লোগান। (একথা যখন বলছেন প্রধানমন্ত্রী তখন বিরোধীরা ইন্ডিয়া ইন্ডিয়া বলে স্লোগান তুলতে থাকেন)।
• কংগ্রেস এত অহঙ্কারে ভরে গেছে যে তার কোনও সীমা নেই। দেশের কিছু জায়গায় কংগ্রেস শেষ কবে জিতেছিল তা লোকের মনেও নেই। ৬১ বছর ধরে তামিলনাড়ুর লোক বলছে, কংগ্রেস নো কনফিডেন্স। পশ্চিমবঙ্গের লোক ৫১ বছর ধরে বলছে কংগ্রেস নো কনফিডেন্স, উত্তরপ্রদেশ আর বিহারে ৩৮ বছর ধরে সেখানকার মানুষ বলছে- কংগ্রেস নো কনফিডেন্স।
• ভোটারদের লুব্ধ করার জন্য ‘গান্ধী’ নামও চুরি করে নিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেসে সবকিছুই একটি পরিবারের কুক্ষিগত।
• এটা ইন্ডিয়া জোট নয় ঘমন্ডিয়া জোট। এই জোটে সবাই প্রধানমন্ত্রী হতে চান।
• এদের ঠিক নেই, কোন রাজ্যে কার সঙ্গে কার জোট হবে। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস তৃণমূল আর বামেদের বিপক্ষে। আর দিল্লিতে একসঙ্গে। আর ১৯৯১ এর বিধানসভা ভোটে এই কমিউনিস্ট পার্টি অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhury) সঙ্গে কী করেছিল ইতিহাস জানে। গত লোকসভা ভোটে যারা ওয়েনাডে কংগ্রেস পার্টির অফিসে ভাঙচুর করেছিল তাদের সঙ্গে জোট করে বসেছে। পুরনো পাপ কী করে লুকোবে?
• এখন তো এরা হাত দিয়ে চলছে। সেই পরিস্থিতি শুধরোবে, সঙ্গে সঙ্গে ছুরি নিয়ে বেরোবে।
• গরিবের ছেলে প্রধানমন্ত্রী হয়েছে ওদের সহ্য হচ্ছে না। আগে ওরা প্লেনে কেক কাটত। এখন সেই প্লেনে ভ্যাকসিন পরিবহণ হয়।
ভারতের সংসদের ইতিহাসে এই প্রথমবার বিরোধীদের অনাস্থা বিতর্কের অন্যান্য দিনে অনুপস্থিত থেকে শুধুমাত্র জবাবি ভাষণের নিজের নির্দিষ্ট দিনে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতা প্রদান করলেন।