আজ ১৫ অগাস্ট, ভারতের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস। সাড়ে তিন মাস ধরে অগ্নিগর্ভ উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুরে। দুই জনজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হওয়া বিবাদ জাতিদাঙ্গার রক্তক্ষয়ী চেহারা নিয়েছে। এখনও প্রায় রোজই নতুন সংঘর্ষের খবর আসছে সেখান থেকে। সেনা নামিয়েও হয়নি প্রতিকার। সেই আবহেই আজ ছিল স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা দিবসের দিন উত্তেজনা আরাও বাড়তে পারে, এমন আশঙ্কা করে আগে থেকেই নিরাপত্তার কড়া চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল মণিপুরকে।
সেই সুরক্ষাবেষ্টনীর মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বাধীনতা দিবসে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, মণিপুরের চুড়াচাঁদপুরে কুকি-জোমি-হামারের লোকেরা উদযাপন করছেন এই দিন, বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় দিয়ে তুলছেন তেরঙা, গলাও মিলিয়েছেন জাতীয় সঙ্গীতে।
এদিন স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানী দিল্লির লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে শোনা গেছে ‘শান্ত’ মণিপুরের কথা। তিনি এদিন বলেন, "গত কয়েক সপ্তাহে মণিপুরে হিংসার ঢেউ বয়ে গেছে। অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং আমাদের মা ও বোনদের অসম্মান করা হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার শান্তির খবর আসছে। সে রাজ্যে শান্তি ফিরে আসছে। ভারত মণিপুরের পাশেই আছে।"
মোদীর এই বক্তব্যের যদিও তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিরোধীরা, তারা দাবি করেছেন মণিপুরে শান্তি ফেরার কথা ‘অসত্য ভাষণ’ ছাড়া কিছু নয় বলে। কারণ ১৫ অগাস্টের আগে যাতে নতুন করে সংঘর্ষ না হয়, সে জন্যই বিশেষ ব্যবস্থা নিতেও দেখা যায় প্রশাসনকে। শান্তি ফিরলে তার দরকার পড়ত না বলেই মনে করছেন বিরোধীরা।
গত ৩ মে থেকে জ্বলছে মণিপুর। কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিদাঙ্গা চলছে। এখনও পর্যন্ত এই দাঙ্গায় মৃত্যু হয়েছে ১৫০ জনের ওপর মানুষের। আহতর সংখ্যা দেড় হাজার ছুঁইছুঁই। অশান্ত মণিপুরে শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ মোদী সরকার, এমনও অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। এমনকী এই ইস্যুতে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদও।
স্বাধীনতা দিবসের আগে অশান্তি ঠেকাতে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী যৌথভাবে নতুন করে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল মণিপুরে। অন্যদিকে, মণিপুরের কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন স্বাধীনতা দিবসে রাজ্যে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। যদিও এখনও পর্যন্ত স্বাধীনতা দিবসে মণিপুর থেকে কোনও অশান্তির খবর মেলেনি।