প্রাকৃতিক বিপর্যয় কমছে না উত্তর ভারতে। প্রকৃতির রোষানল থেকে রেহাই পাচ্ছে না উত্তরাখণ্ড। বৃষ্টি-বন্যা-ধসে বিপর্যস্ত দেবভূমি নামে পরিচিত রাজ্যটি। জোশীমঠে এমনিতেও গত কয়েক মাসের মধ্যে একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণের কাজ চলায় সামান্য বৃষ্টিতেই ভূমিধস নামছে। এখন অতি বৃষ্টিতে ফের জোশীমঠের একাধিক জায়গায় পাহাড়ি ধস নেমেছে।
সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, একটি দোতলা বাড়ি ধসের কারণে ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে। বাড়িটিতে কয়েকজন শ্রমিক ছিলেন। তাদের তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের এখনও খোঁজ মেলেনি। মনে করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপে আটকে রয়েছেন শ্রমিকরা।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ১৫ অগাস্ট রাতে উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার জোশীমঠে ধস নেমে একটি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বদ্রীনাথ হাইওয়ের পাশে ছিল বাড়িটি। দুর্ঘটনার সময় বাড়ির ভিতরে ৮ থেকে ১০ জন ছিলেন বলেই জানা গেছে। এদের মধ্যে ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে তিন জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ভিতরে এখনও আরও কয়েকজন আটকে রয়েছেন বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
অলকানন্দা নদীর পাড়ে রাস্তা কাটার কাজ হচ্ছিল। সেখানের শ্রমিকেরাই বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ওই বাড়িটিতে গিয়েছিলেন। তখনই এই ভয়াবহ বিপত্তি ঘটে। আচমকা ধসে পড়ে বাড়িটি। চাপা পড়ে যান সকলে। প্রশাসনের তরফে এখনও মৃত ও নিখোঁজের সংখ্যা জানানো হয়নি।
জোশীমঠে বিপর্যয়ের সূত্রপাত নতুন বছরের একেবারে গোড়ায়। জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে শহরের একাধিক বাড়িতে হঠাৎ ফাটল দেখা দেয়। ক্রমশ চওড়া হয় সেই ফাটল। কোনও কোনও বাড়ি চোখের সামনে ভেঙে পড়ে তাসের ঘরের মতো। জোশীমঠ শহরটি মূলত ভূমিধস প্রবণ এলাকার উপরেই তৈরি। তাই সেখানকার মাটি আলগা। তার উপর অবাধে পাহাড় কেটে নগরের সম্প্রসারণ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, জাতীয় সড়ক চওড়া করার কাজ চলায় শহরের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃষ্টি হলেই মাটি ধসে পুরনো বাড়িগুলি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।