ধারণা করা হচ্ছে যে, বিদ্রোহী সেনাদের দ্বারা গ্যাবনের প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়টি ছিলো সুপরিকল্পিত। সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ-বিক্ষোভকে ক্ষমতা দখলের পক্ষে কারণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এ কথা বলছেন বিশ্লেষকরা।
বুধবার সৈন্যরা প্রেসিডেন্ট আলি বঙ্গো ওডিম্বাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। তার পরিবার পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে আফ্রিকার তেল সমৃদ্ধ দেশটি শাসন করেছে। অভ্যুত্থানের নেতারা বঙ্গোকে দায়িত্বজ্ঞানহীন শাসনব্যবস্থার জন্য অভিযুক্ত করেছেন; তারা বলছেন এই শাসনব্যবস্থা দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয়ার ঝুঁকিতে ফেলেছিলো। বিদ্রোহী সৈন্যরা বলেছে, তারা প্রেসিডেন্টকে গৃহবন্দী করেছে এবং মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্যকে আটক করেছে।
এদিকে, আফ্রিকান ইউনিয়নের শান্তি এবং নিরাপত্তা পরিষদ বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছে এবং দেশটির সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত “এইউ-এর সকল কার্যক্রম” থেকে গ্যাবনকে অবিলম্বে স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়নের সকল শাখা ও প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম থেকেও গ্যাবনের কার্যক্রম স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন তারা।
গত সপ্তাহান্তে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বঙ্গোকে বিজয়ী ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা পর, গ্যাবনের এলিট বাহিনী, রিপাবলিকান গার্ডের প্রধান জেনারেল ব্রিস ক্লোটেয়ার ওলিগুই এনগুইমাকে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেশটির নতুন নেতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, এই নির্বাচনে অনিয়ম এবং স্বচ্ছতার অভাব ছিলো।
গ্যাবনের এই অভ্যুত্থান হলো, গত তিন বছরে মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় সংগঠিত অষ্টম সামরিক অভ্যুত্থান। আর, নিজারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রায় এক মাস পর এই অভ্যুত্থান সংঘটিত হয় । নিজার, প্রতিবেশী বুরকিনা ফাসো ও মালির তুলনায় গ্যাবনকে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। নিজার এবং মালিতে, ২০২০ সাল থেকে দুটি করে অভ্যুত্থান হয়েছে এবং দেশ দু’টি চরমপন্থী সহিংসতায় জর্জরিত।
বঙ্গোর পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি এবং দেশের তেল সম্পদকে দেশটির প্রায় ২০ লাখ জনসংখ্যার কল্যাণে ব্যবহার না করার অভিযোগ রয়েছে।