গত সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর বিক্ষোভে গুরুতর আহত কিয়ান দেরাখশান ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ইরানের জনগণ শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হবে। সেই সাথে ইরানে "নারী, জীবন, স্বাধীনতা" এর পতাকায় স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের একটি নতুন যুগের সূচনা হবে ।
২২ বছর বয়সী আমিনি ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মারা যান। সঠিক ভাবে হিজাব না পরার কথিত অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়েছিল। তার মৃত্যুকে ঘিরে প্রতিবাদের স্লোগান হয়ে উঠেছে"নারী, জীবন, স্বাধীনতা"। ইরানে নারী অধিকার আদায়ের ভাষাও হয়ে উঠেছে এটি।
সাক্ষাত্কারে কিয়ান ইরানের কুর্দি অঞ্চলে আমিনির শহর সাক্কেজে ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২-এর ঘটনার প্রত্যক্ষ বিবরণ দেন। সেদিন - আমিনির শেষকৃত্যের দিন - তিনি "নারী, জীবন, স্বাধীনতা" স্লোগান দিয়ে জনতার সাথে যোগ দিয়েছিলেন। নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া একটি কাঁদানে গ্যাসের ক্যানিস্টার তুলে নিয়ে তিনি এটি তাদের দিকে আবার ছুঁড়ে দিয়েছিলেন।
কিয়ানের মতে, ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের এজেন্টরা তাকে পেলেট গান দিয়ে প্রায় ১০০ টি গুলি করে। তাৎক্ষণিকভাবে, ঘটনাস্থলে থাকা লোকেরা তাকে নিকটবর্তী একটি ক্লিনিকে এবং শাফা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় । পরবর্তীতে তাবরিজের একটি হাসপাতালে নিয়ে একাধিক অস্ত্রোপচার করা হয়। তিনি ১৮ দিন ধরে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ছিলেন।
কিয়ান বলেন,, তার ডান হাতের হাড়ের মধ্যে একটি গুলি স্নায়ুকে আঘাত করেছে। তার মেরুদণ্ডের কাছে আরও দুটি গুলি আঘাত হানে, যার ফলে তীব্র এবং ক্রমাগত ব্যথা হয়। তাছাড়া তার ডান চোখের দৃষ্টি শক্তি কিছুটা হ্রাস পায়। ব্যথা উপশমে তিনি নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন।
কিয়ান বলেন, হাসপাতাল ছাড়ার পর থেকে কর্তৃপক্ষ তাকে বারবার তলব করেছে ও হুমকি দিয়েছে।
নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় আমিনির মৃত্যুর পরে জনসাধারণের বিক্ষোভ গত ৪৪ বছরে ইসলামী প্রজাতন্ত্র সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সমালোচনামূলক চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে একটি।