বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, “সব অংশীজনদের আন্তরিক সহযোগিতা ছাড়া সরকার সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারবে না।” বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার বৈঠক প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, “এটা স্পষ্ট যে আমরা আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে চাই। যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করার কথা বলেছে। তারপর আমরা বলেছি, আমরা এর গ্যারান্টি দিতে পারি না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আয়োজন শুধু সরকারের একার ওপর নির্ভর করে না।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “আমাদের দেশে সহিংসতা মুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করতে, সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। আর, নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে, বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে যুক্তরাষ্ট; যাতে সব দল ও মতের মানুষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সহযোগিতা করতে পারেন।”
আব্দুল মোমেন বলেন, “আমাদের দেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা মানুষকে বিশ্বাস করি। আমরা মনে করি না, জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে। ভোট কারচুপির মাধ্যমে কেউ ক্ষমতায় এলে, সেই সরকার বেশিদিন টিকবে না। আমাদের দেশে এরকম নজির আছে।”
নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানালেও, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো অনেক দেশ তাদের দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের অনুমতি দেয় না।”
তিনি বলেন, “বিদেশিরা কোনো কিছুকে ভালো বললেই, তা ভালো হবে; না হলে ভুল হবে, আমি এমন মনে করি না। আমরা বিদেশিদের কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে দেশ চালাতে চাই না।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, “বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়েছে।” তিনি জানান যে আজরা জেয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন, “আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা।”
আজরা জেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের আগে মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ তৈরি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবিকা নিশ্চিত করতে, তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করা উচিৎ; অন্যথায় রোহিঙ্গারা হত্যা, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান ও বাণিজ্যসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় এই অঞ্চলটি নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। রোহিঙ্গারা এখানে দীর্ঘদিন অবস্থান করায়, হতাশ হয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে এবং এখানে তারা কোনো ভবিষ্যৎ দেখছে না ।“