সূর্য অস্ত যাচ্ছে; এমন এক সন্ধ্যায় এক কাতারে বসে ১২ জনের বেশি পুরুষ মাছ ধরছেন ভারতের কাশ্মীরের অন্যতম প্রধান নদী ঝিলামের ছোট একটি উপদ্বীপে।
এই বছরের শুরুতে ভারী বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যা হয়েছে কাশ্মীরে। সেপ্টেম্বরে তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে কাশ্মীর উপত্যাকায় এমন তাপমাত্রা দেখা যায়নি। জলবায়ু পরিবর্তনের চরম প্রভাব দৃশ্যমান হচ্ছে। আর, কখনো কখনো এই প্রভাব দেখা দিচ্ছে অপ্রাত্যাশিত স্থানেও।
তিন মাস আগে থেকে প্রবল বর্ষণ শুরু হয়, অব্যাহত থাকে মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। এই অত্যাধিক বৃষ্টিপাতের কারণে জল প্রবাহ ঝিলমের ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। তীর উপচে পানি প্রবাহিত হতে থাকে। নদীর জল স্তরের ক্রমাগত বৃদ্ধি তখন বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। তারা আশঙ্কা করে যে, এই অঞ্চলে ২০১৪ সালের গ্রীষ্মের মতো চরম বন্যা দেখা দিতে পারে।সে সময়ের বন্যায় শত শত মানুষ মারা যায়; এবং বাস্তুচ্যুত হয় প্রায় ১০ লাখ মানুষ।
এছাড়া, বৃষ্টিপাতের অভাব এবং তাপপ্রবাহের কারণে রাজধানী শহর শ্রীনগরের কিছু এলাকাসহ উপত্যকার বিভিন্ন অংশে পানির অভাব দেখা দেয়। আর, কাশ্মীর উপত্যকার বহু গ্রামের মানুষ পান করার জন্য দূষিত পানি সংগ্রহ করতে থাকে।
সম্প্রতি ইংরেজি দৈনিক গ্রেটার কাশ্মীরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জলশক্তি বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী অশোক কুমার গন্ডোত্রা স্বীকার করেছেন, স্থানীয় বাসিন্দারা পানীয় জলের সংকট মোকাবেলা করছেন।
কাশ্মীরের তাপপ্রবাহের কারণে উদ্যান ও কৃষি খাতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে; বিশেষ করে জম্মু ও কাশ্মীরের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচিত আপেল এবং জাফরানের মতো অর্থকরী ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।