অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে মৃদু তাপপ্রবাহ, বৃষ্টির পূর্বাভাস; সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত


বাংলাদেশে বন্যা
বাংলাদেশে বন্যা

এদিকে, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) মৃদু তাপ প্রবাহের মধ্যে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ঢাকাসহ সারাদেশে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে।

বিএমডি’র পূর্বাভাসে বলা হয়েছে; ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

এদিকে, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ এবং ঢাকা, খুলনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, বগুড়া, সীতাকুণ্ড, নারায়ণগঞ্জ ও নীলফামারী জেলার উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘন্টায় তা কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। বলেছে, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দেশের অন্যত্র সামান্য হ্রাস পেতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

অন্যদিকে, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায়, রাঙামাটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

নওগাঁয় পানিবন্দী ২ হাজার পরিবার

অন্য দিকে, কয়েকদিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নওগাঁর ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে জেলার ৪টি উপজেলার ৭টি পয়েন্ট ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট।

এলাকাবাসী জানা যায়, মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার রানীনগর, আত্রাই, মান্দা ও মহাদেবপুর উপজেলার বেড়িবাঁধের ৭টি পয়েন্ট এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি অংশ ভেঙে বন্যার পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির আউশ ও আমন ধান খেত। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এছাড়া রানীনগর-আত্রাই সড়কের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে, সড়ক পথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

পানিবন্দী মানুষদের মধ্যে সরকারি সহযোগিতায় চাল, ডালসহ শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে; তবে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহৃত থাকায়, ভেঙে যাওয়া বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে বৃহষ্পতিবারও (২৮ সেপ্টেম্বর) লোকালয়ে পানি ঢুকতে দেখা গেছে।

আত্রাই উপজেলার মালঞ্চি গ্রামের আব্দুল মান্নান বলেন, “চারদিন আগে ছোট যমুনা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করে। ঘরের মধ্যে এক হাটু পানি।” একই গ্রামে গৃহবধূ নিলুফা বেগম বলেন, “বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। মানুষের বাড়িতে গিয়ে রাতযাপন করতে হচ্ছে। বাচ্চাদের নিয়ে বিপদে আছি।”

নান্দাইবাড়ী গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, “আত্রাই নদীতে পানির প্রচুর চাপ। বুধবার সকাল থেকে রানীনগর-আত্রাই সড়কের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙতে শুরু করে। আমরা, গ্রামবাসী মিলে রক্ষা চেষ্টা করেছিলাম। বেলা ১১টার দিকে অবশেষে ভেঙে যায়।”

নওগাঁর জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা বলেন, “পানিবন্দি পরিবারের মাঝে সরকারি সহযোগিতায় চালসহ শুকনা খাবার বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। খাদ্য সহায়তা বিতরণে জেলা প্রশাসনের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।” নওগাঁ-৬ (রাণীনগর-আত্রাই) আসনের সাংসদ আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্থ স্থান মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।”

XS
SM
MD
LG