অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করুন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দিন: আহবান বিএনপির


গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটি। ৩ অক্টোবর, ২০২৩।
গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটি। ৩ অক্টোবর, ২০২৩।

প্রবীণ নাগরিকের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করে, খালেদা জিয়াকে যত দ্রুত সম্ভব উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটি। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর), গুলশান কার্যালয়ে, দলটির স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সঠিক চিকিৎসা পাওয়া একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। বেগম খালেদা জিয়া দেশের একজন প্রবীণ নাগরিক। সংবিধান তার জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করেছে।”

তিনি বলেন, “দেশে যে রোগের চিকিৎসা করা যায় না, সে রোগের চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে বাধা দেয়া সংবিধানকে উপেক্ষা করার শামিল। প্রকৃতপক্ষে আমাদের নেত্রীকে (খালেদা) সংবিধানে দেয়া চিকিৎসা সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা অন্যায্য, অমানবিক ও অসাংবিধানিক।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আইনের অজুহাতে গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করার কোনো সুযোগ নেই। দেশে বিএনপি চেয়ারপার্সনের চিকিৎসা অসম্ভব। সরকার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে, আইনের অজুহাতে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”

তিনি বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অন্যায়ভাবে হত্যার পরিণতি কখনোই ভালো হতে পারে না। তাই আমরা আবার সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি; আমাদের নেত্রীকে নাগরিক হিসেবে তার মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করে, যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিন। অন্যথায়, একজন গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় প্রবীণ নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করা এবং তার প্রতি অবৈধ, অমানবিক ও নিষ্ঠুর মনোভাব দেখানোর জন্য সরকার দায়ী থাকবে।”

উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার তার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তার জীবন বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে একটি ‘উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে’ চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন জমা দেন।

আইন মন্ত্রণালয় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং পরামর্শ দিয়েছে যে তাকে প্রথমে কারাগারে ফিরতে হবে এবং এরপর এই বিষয়ে অনুমতি পেতে আদালতে আবেদন করতে পারেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা তাকে জোর করে বিদেশে নিয়ে যেতে পারি না। এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়... আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন নিশ্চিত হবে এবং তারপর তার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”

সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ নেই: আসাদুজ্জামান খাঁন

এদিকে, সোমবার (২ অক্টোবর) বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, “আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ নেই।” নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এ বিষয়ে যেহেতু আইনি জটিলতা রয়েছে, তাই সেই পত্র আইন মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছিলো, তাদের মতামতের জন্য। মতামত যা এসেছে, তা বোধহয় তাদের (খালেদা জিয়ার পরিবার) পক্ষে আসেনি। এটা দেয়া সম্ভব নয় বলে আইন মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের জানিয়েছে।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, “এখন আমাদের আর কিছু করণীয় নেই বলে আমি মনে করছি।” সিদ্ধান্ত কি খালেদা জিয়ার পরিবারকে জানিয়ে দেয়া হবে; জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তারা যদি জানতে চান আমরা অবশ্যই জানিয়ে দেবো। তবে, ইতোমধ্যেই তিনি জেনে গেছেন।”

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তাদের কোনো কিছু জানার থাকলে, কথা বলতে পারেন। কিন্তু, সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার সুযোগ এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই।”

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার আবেদন নাকচ করেছে আইন মন্ত্রণালয়

অন্যদিকে, রবিবার (১ অক্টোবর) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে করা আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি জানান যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি আবেদন পাওয়ার পর, আইন মন্ত্রণালয় এ অভিমত ব্যক্ত করে।

XS
SM
MD
LG